খেলার মাঠে মোদির অপারেশন সিঁদুরের যে জবাব দিলেন নাকভি

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আলাদা উত্তাপ কাজ করে। কিন্তু এবারের এশিয়া কাপ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ক্রিকেটের লড়াইয়ে টেনে এনেছে রাজনীতি। স্বয়ং ভারতীয় প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও রাজনীতি থেকে ক্রিকেটকে আলাদা করতে পারেনি। এশিয়া কাপের ফাইনালের লড়াইকে তিনি তুলনা করেছেন অপারেশন সিঁদুরের সঙ্গে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভিও তার কথার পাল্টা জবাব দিয়েছেন।
এশিয়া কাপের ৪১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত-পাকিস্তান। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। আর এই জয়কে গত মে মাসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের চালানো ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন মোদি।
গতকাল রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ভারত এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হলে ক্রিকেটারদের শুভেচ্ছা জানিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’ অ্যাকাউন্টে মোদি লিখেছেন, ‘খেলার মাঠেও অপারেশন সিঁদুর। ফলাফল একই—ভারতের জয়! অভিনন্দন আমাদের ক্রিকেটারদের।’
পিসিবির চেয়ারম্যান নাকভি মোদির পোস্টের রিটুইট করে লিখেছেন, ‘তোমার গর্বের মাপকাঠি যদি যুদ্ধ হয়, তাহলে ইতিহাস এরই মধ্যে পাকিস্তানের হাতে তোমার লজ্জাজনক পরাজয়ের কথা লিখে রেখেছে। কোনো ক্রিকেট ম্যাচ সেই সত্যকে বদলাতে পারবে না। খেলার মধ্যে যুদ্ধ টেনে আনা শুধু হতাশাকে প্রকাশ করে এবং খেলার মূল চেতনাকেই কলঙ্কিত করে।’

পিসিবি চেয়ারম্যান নাকভি বর্তমানে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও তিনি।
চলতি বছরের এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর মে মাসে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা হামলা চালালে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দুই দেশ। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশের সংঘাত থামে।
এবারের এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছে তিনটি ম্যাচে। একটি ম্যাচেও টসের সময় ভারতের অধিনায়ক কিংবা ম্যাচ শেষে ভারতীয় দল পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলায়নি। দুই দেশের এই রাজনৈতিক বৈরিতা যে ক্রিকেট মাঠেও প্রবেশ করেছে সেটি এই তিনটি ম্যাচেই ফুটে উঠেছে।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মাঠে হাত না মেলানোর পর ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অপারেশন সিঁদুরের কথা টেনে আনেন সূর্যকুমার যাদব। দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফের বিমান বিধ্বস্তের ভঙ্গিতে উদযাপন ও সাহিবজাদা ফারহানের বন্দুক চালানোর ভঙ্গিতে উদযাপন নিয়ে বেশ সমালোচনা হয়েছে।
এরপর অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) শাস্তি দিয়েছে সূর্যকুমার ও রউফকে। কিন্তু এতেও থেমে থাকেনি দুই দেশের লড়াই। যেটি দেখা গেছে ফাইনালে। চ্যাম্পিয়ন হয়ে নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকৃতি জানায় ভারতীয় ক্রিকেট দল।