ভারতে শরণার্থী বাংলাদেশিরা আর অনুপ্রবেশকারী নন

ভারতে অনুপ্রবেশকারীর সংজ্ঞাই বদলে দিল মোদি সরকার। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব সংখ্যালঘু মানুষ ধর্মীয় কারণে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা সেখানেই থাকতে পারবেন। তাঁদের আর অনুপ্রবেশকারী হিসেবে ধরা হবে না।
সোমবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যদি কেউ বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে ভারতে প্রবেশ করে থাকেন, তাঁদের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও তাঁরা মনে করলে ভারতে থেকে যেতে পারবেন। এর জন্য পাসপোর্ট আইন কিংবা ফরেনার্স অ্যাক্ট লঙ্ঘনের দায়ে পড়বেন না তাঁরা।
এ ছাড়া ভারতে প্রবেশের পাসপোর্ট আইন, ১৯২০ এবং বিদেশি নাগরিক আইন, ১৯৪৬-এর আওতার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। বৈধ কাগজপত্র ছাড়া কেউ ভারতে প্রবেশ করে থাকলেও তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য করা হবে না।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় নানা কারণে হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন। এর আগে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ভারতে আসা শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছিল সরকার।
ভারতে গত লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারে নেমে অনুপ্রবেশকারী এবং শরণার্থী বিবাদ উসকে দিয়েছিলেন স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি। তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, অনুপ্রবেশকারীদের ভারতের মাটিতে ঠাঁই দেওয়া হবে না। সে সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে চাপের মুখে মোদি অনুপ্রবেশকারী এবং শরণার্থীদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বলে দাবি করেন। তার পর কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসে মোদি সরকার শরণার্থীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভিসা চালু করে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীদের একটা বড় অংশ যায় পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে। গত লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়েই অনুপ্রবেশকারী খেদানোর ডাক দিয়েছিলেন মোদি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আগামী ২০১৬ সালের গোড়ার দিকে পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের এ ঘোষণা গেরুয়া শিবিরের ভোটব্যাংককে সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করবে।