মনজুর হোসেনের উদ্যোগে এক মলাটে ‘জুলাইয়ের গান’

২০২৪ সালের জুলাই। রাস্তায় রাস্তায় আন্দোলন, চোখের সামনে ইতিহাস। সেই উত্তাল সময়েই জন্ম নিয়েছিল গান— প্রতিবাদের গান, সাহসের গান, প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া গান। এবার সেই গানগুলো এক মলাটে। সৌখিন আলোকচিত্রী ও অ্যাকটিভিস্ট মনজুর হোসেনের উদ্যোগে প্রকাশিত হচ্ছে ‘জুলাইয়ের গান’।
এই বইয়ে সংকলিত হয়েছে চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময়কার ৬৩টি গান—যেগুলো আন্দোলনের দিনগুলোতে সাহস জুগিয়েছে লাখো মানুষের। র্যাপ, কবিতা, গানের সংমিশ্রণে তৈরি সেই প্রতিরোধের ভাষা এবার পাঠযোগ্য রূপে ধরা দেবে।
মনজুর হোসেন জানালেন, ‘এই বই আন্দোলনের গানের একটি সংরক্ষণ। ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য।’ তিনি বলেন, ‘উপমহাদেশের আন্দোলনের ইতিহাসে গান সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তেভাগা আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ— সর্বত্র সুরই হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের প্রতীক। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’
২০২৪ সালের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট—এই সময়কালেই রচিত বা প্রকাশিত হয় গানগুলো। সেগুলো থেকেই বাছাই করা হয়েছে সংকলনের জন্য। র্যাপার মোহাম্মদ সেজানের ‘কথা ক’ গানটি যেমন রাতারাতি আন্দোলনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল, তেমনি শূন্য ব্যান্ডের ‘শোনো মহাজন’, কবি নজরুলের ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ কিংবা শায়ানের ‘আমার সূর্য’— প্রতিটি গানে মিশে গিয়েছিল ছাত্র-জনতার প্রতিরোধ।
মনজুর হোসেন আরও বলেন, ‘এই গানগুলো কেবল সুর বা কথা নয়— এটা ছিল অস্ত্র। দমন-পীড়নের ভেতরেও এগুলো প্রাণ দিয়েছিল আন্দোলনে। নতুন প্রজন্মের অনেকেই রাজনীতিকে পাশ কাটিয়ে চলত। কিন্তু সেই জুলাইয়ে তারা জেগে উঠেছিল। গান ছিল সেই জাগরণের অনুঘটক।’
এর আগে মনজুর হোসেন জুলাই আন্দোলনের দেয়ালচিত্র নিয়ে প্রকাশ করেছিলেন ‘জুলাইয়ের দেয়ালচিত্র, দেশ সংস্কারের স্লোগান’ বইটি। সেই বইয়ের জন্য তিনি সাড়ে ১০ হাজারের বেশি গ্রাফিতি থেকে বেছে নিয়েছিলেন ৪৫০টির বেশি দেয়ালচিত্র।
‘জুলাইয়ের গান’ প্রকাশ করছে গয়রহ প্রকাশনী। এটি শুধু একটি গানের সংকলন নয়— এটি একটি সময়ের দলিল। একটি আন্দোলনের আত্মা। একটি প্রজন্মের কণ্ঠস্বর।