অগ্নি-২
‘একটা চুমু ও প্রতিশোধের ছবি’

ঈদের পর আবারও জমে উঠেছে ঢাকা শহর। সবাই নিজেদের কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। নতুন উদ্যমে কাজ করতে শুরু করেছেন। তারপরও ঈদের আমেজ কাটেনি পুরোপুরি। যে কারণে এখনো প্রেক্ষাগৃহে চলছে ঈদে মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো।
গতকাল শনিবার মিরপুরের সনি সিনেমা হলে গিয়ে দেখা গেল, টিকেট কাউন্টার বন্ধ কিন্তু দর্শক সারি অনেক লম্বা। খবর নিয়ে জানা গেল, সব টিকেট কালোবাজারিদের হাতে চলে গেছে। যে কারণে কাউন্টার বন্ধ। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন জয়নাল নামের একজন কালোবাজারি। ৩০ টাকার টিকেট তিনি বিক্রি করছেন ১০০ টাকায়। আর যেহেতু কাউন্টার বন্ধ, তাই দর্শক অনেকটা বাধ্য হয়েই ৭০ টাকা বেশি দিয়ে টিকেট কিনছেন।
পরিবেশ মোটামুটি পরিপাটি। সব শ্রেণির দর্শক থাকলেও পোশাকশ্রমিকের সংখ্যাই বেশি মনে হলো। একজন নারী দর্শকের সঙ্গে কথা বললাম, নাম আয়েশা খাতুন, বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তিনি জানালেন, চার-পাঁচ বছর ধরে পোশাক কারখানায় কাজ করছেন। আর প্রতি শুক্রবারই কারখানার অনেকে দল বেঁধে ছবি দেখতে হলে আসেন।
কেমন লাগল অগ্নি-২? এমন প্রশ্নের জবাবে আয়েশা বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। যতক্ষণ ছবি চলছে বাইরে যেতে ইচ্ছে করে নাই। গানগুলাও ভালো লাগছে। এর আগে অনেক বিদেশি ছবি দেখেছি সিডিতে, টিভিতে, এই ছবিটাও একদম বিদেশি ছবি মনে হইছে।’
ছবিতে নায়িকা মাহিয়া মাহিকে বাংলাদেশি বলা হলেও তাঁকে বাংলাদেশের মেয়ে মনে হয়নি- এমনই মন্তব্য করলেন মিরপুর বাঙলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আমিরুল ইসলাম, তিনি বলেন, ‘ভাই এই ছবিটা অ্যাকশন ছবি কিন্তু এটা বাংলাদেশর ছবি মনে হয়নি। আমরা যারা হলে ছবি দেখতে আসি, তখন আমরা আমাদের দেশের ছবি দেখতে চাই। আবার হলিউডের ছবি যখন দেখি, তখন আমরা মানসিকভাবে ওই ছবিই দেখতে বসি। কিন্তু আমাদের হলে যখন আমরা ছবি দেখি, তখন আমরা বাংলাদেশের ছবি দেখতে চাই।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মণিপুর স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘এটা আসলে একটা চুমু এবং প্রতিশোধের গল্প। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নায়ক ওমকে একটা চুমু খায় নায়িকা মাহি, সারা ছবিতে ওম মাহির পেছনে ঘোরে আরেকটা চুমু খাওয়ার জন্য, আর মাহি তার প্রেমিকের হত্যার প্রতিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে ছুটতে থাকে। যেভাবেই হোক, মাহি প্রতিশোধ নেয়। ছবি দেখে চোখের আরাম পেয়েছি, ক্যামেরার কাজ খুব ভালো। মাহির অভিনয় ভালো লেগেছে। যতক্ষণ ছবি দেখেছি, খুবই ভালো লেগেছে কিন্তু ছবি শেষে মনে হয়েছে সবই শেষ। ছবি দেখার পর আর কিছুই মনে নেই বা মনে থাকার মতো কিছু নেই।
আসলে গল্পের গভীরতা নেই। এ ছাড়া মেকিং খুব ভালো হয়েছে।’
ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত অগ্নি-২ চলচ্চিত্র দেখে প্রেক্ষাগৃহ থেকে বেরিয়ে এমনই ছিল দর্শকদের প্রতিক্রিয়া।