চীনে প্রবল বৃষ্টিপাত ও বন্যায় বৃদ্ধাশ্রমে ৩১ জনের মৃত্যু

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের উপকণ্ঠে মিয়ুন জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত ও বন্যায় একটি বৃদ্ধাশ্রমে অন্তত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের অধিকাংশই চলাফেরায় অক্ষম ছিলেন।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা বুক সমান পানির মধ্যে আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। তবে ততক্ষণে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, জরুরি পরিকল্পনায় “ঘাটতি ও ত্রুটি” ছিল এবং এটিকে একটি “বেদনাদায়ক শিক্ষা” ও “সতর্কবার্তা” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
চীনের চলতি গ্রীষ্মে ভয়াবহ আবহাওয়ার মধ্যে বেইজিংয়ে বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে পূর্বাঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়।
চীনের গণমাধ্যম জানায়, বন্যার সময় বৃদ্ধাশ্রমটিতে প্রায় ৭৭ জন বয়স্ক বাসিন্দা ছিলেন, যাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জন আটকে পড়েন। পানির উচ্চতা তখন প্রায় ২ মিটার (৬ ফুট) ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
তাইশিতুন শহরে অবস্থিত ওই বৃদ্ধাশ্রমটি প্রধানত শারীরিকভাবে অক্ষম, স্বল্প আয়ের ও সরকার থেকে ভাতা পাওয়া প্রবীণদের দেখভাল করে থাকে।
এক চীনা কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এই শহরের কেন্দ্রীয় অংশকে নিরাপদ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হতো, তাই আমাদের সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় এটি অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “এটি প্রমাণ করে যে, আমাদের জরুরি পরিকল্পনায় ফাঁকফোকর রয়েছে। চরম আবহাওয়ার বিষয়ে আমাদের উপলব্ধি যথেষ্ট ছিল না। এই করুণ ঘটনা আমাদের জন্য একটি সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে।”

পাশাপাশি হেবেই প্রদেশে বৃষ্টিপাতে ১৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। চেংদে শহরে মারা গেছেন আরও ৮ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ১৮ জন।
উল্লেখ্য, বেইজিংয়ে বর্ষাকালে বন্যা নতুন কিছু নয়। ২০১২ সালের জুলাইয়ে মাত্র একদিনে ১৯০ মিমি বৃষ্টিতে শহরটিতে ৭৯ জন নিহত হয়েছিলেন।
চলতি গ্রীষ্মে চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত, ভূমিধস ও টাইফুনের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শানদং প্রদেশে টাইফুন উইফার আঘাতে ২ জন নিহত ও ১০ জন নিখোঁজ হন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইয়ান শহরে ভূমিধসে মারা যান আরও ৩ জন।