জন্মহার বাড়াতে শিশুর মা-বাবাকে ভাতা দেওয়ার ঘোষণা চীনের

দেশে সন্তান জন্মহার বাড়ানোর জন্য নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে চীন সরকার। এখন থেকে তিন বছরের কম বয়সী প্রতিটি শিশুর লালন-পালনের জন্য তাদের মা-বাবাকে ভাতা প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১০ বছর আগে বিতর্কিত ‘এক সন্তান নীতি’ বাতিল করে চীনের শাসকদল কমিউনিস্ট পার্টি। তবে এতেও দেশটির জন্মহার বাড়ানো যায়নি, বরং কমেছে। ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটি জনসংখ্যা সংকটের মুখে পড়েছে।
চীনের বেশ কয়েকটি প্রদেশে ইতোমধ্যে সন্তান বেশি নিতে উৎসাহিত করার জন্য নাগরিকদের বিভিন্ন ধরনের ভাতা প্রদান চালু হয়েছে। তবে গতকাল সোমবার (২৮ জুলাই) ঘোষিত নতুন প্রকল্পের আওতায় মা-বাবাকে তিন বছরের কম বয়সী প্রতিটি শিশুর জন্য বছরে তিন হাজার ৬০০ ইউয়ান (প্রায় ৫০০ ডলার) করে ভাতা দেওয়া হবে। এটি প্রায় দুই কোটি পরিবার সন্তান পালনের খরচ মেটাতে সাহায্য পাবে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল সিসিটিভি জানিয়েছে, এই প্রকল্পের আওতায় ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া শিশুদের পরিবার ভাতার জন্য আবেদন করতে পারবে।
চীনের স্থানীয় সরকারগুলোও জন্মহার বাড়াতে নানা চেষ্টা করছে। গত মার্চে হোহোট শহরে যাদের অন্তত তিনটি সন্তান আছে, এমন দম্পতিদের প্রতি শিশুর জন্য এক লাখ ইউয়ান পর্যন্ত অনুদান দেওয়া শুরু হয়। বেইজিংয়ের কাছে শেনিয়াং শহরও তিন বছরের কম বয়সী তৃতীয় সন্তান আছে এমন পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে ৫০০ ইউয়ান দিচ্ছে।

এ ছাড়া গত সপ্তাহে স্থানীয় সরকারগুলোকে বিনামূল্যে প্রাক-স্কুল শিক্ষা চালু করার পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে বেইজিং।
চীনে সন্তান পালন করা বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় ব্যয়বহুল। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, চীনে একটি শিশুকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত বড় করতে গড়ে প্রায় ৭৫ হাজার ৭০০ ডলার খরচ হয়।
জানুয়ারিতে প্রকাশিত সরকারি তথ্যে দেখা গেছে, গত বছর টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমেছে। ২০২৪ সালে ৯ দশমিক ৫৪ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে সামান্য বেশি। তবে জন্মের চেয়ে মৃত্যুরে হার বেশি হওয়ায় দেশের মোট জনসংখ্যা কমছেই। এ ছাড়া দেশটিতে বর্তমানে ১৪০ কোটি মানুষ প্রবীণ, যা সরকারের জন্য আরও বড় চিন্তার কারণ।