জাপান সাগরে চীন-রাশিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া শুরু

চীন ও রাশিয়া জাপান সাগরে তাদের বার্ষিক যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছে। এই মহড়ার লক্ষ্য হলো— দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও শক্তিশালী করা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বর্তমান বৈশ্বিক ব্যবস্থার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনা। ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে চীন মস্কোকে অর্থনৈতিকভাবে সমর্থন করে চলেছে, যা তাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করেছে।
চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার (৩ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়ার ভ্লাদিভোস্টক বন্দরের কাছের জলসীমায় তিন দিনব্যাপী এই মহড়া চলবে। উভয় পক্ষ এই মহড়ায় সাবমেরিন উদ্ধার, যৌথ সাবমেরিন-বিরোধী অভিযান, বিমান প্রতিরক্ষা ও ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী অভিযান ও সামুদ্রিক যুদ্ধ অনুশীলন করবে।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, চীনের গাইডেড-ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী শাওক্সিং ও উরুমকিসহ চারটি চীনা জাহাজ রাশিয়ান জাহাজের পাশাপাশি এই মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।
মহড়া শেষ হওয়ার পর দুই দেশ প্রশান্ত মহাসাগরের প্রাসঙ্গিক জলসীমায় যৌথ নৌ টহল পরিচালনা করবে।
চীন ও রাশিয়া বেশ কয়েক বছর ধরে বার্ষিক মহড়া চালিয়ে আসছে। যৌথ সমুদ্র মহড়া ২০১২ সালে শুরু হয়েছিল। গত বছরের মহড়াটি চীনের দক্ষিণ উপকূলে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
জাপান সাগরে এই বছরের মহড়া অনুষ্ঠিত হওয়ায় জাপান উদ্বিগ্ন। গত মাসে প্রকাশিত তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে, জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি করছে।
তবে, মার্কিন নৌ ইনস্টিটিউটের অনলাইন সংবাদ ও বিশ্লেষণ পোর্টালের একটি প্রতিবেদন অনুসারে রাশিয়ান নৌবাহিনী প্যাসিফিক ফ্লিট এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছে, এই মহড়াটি প্রতিরক্ষামূলক প্রকৃতির ও অন্য দেশের বিরুদ্ধে পরিচালিত নয়।

শুক্রবার (১ আগস্ট) চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই বছরের মহড়ার লক্ষ্য হলো— দুই দেশের বিস্তৃত কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও গভীর করা।
চীন ইউক্রেনে রাশিয়ার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের কখনো নিন্দা করেনি বা মস্কোকে সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউক্রেনের অনেক মিত্র বিশ্বাস করে, বেইজিং মস্কোকে সামরিক বা অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে।
ইউরোপীয় নেতারা গত মাসে চীনকে তাদের প্রভাব ব্যবহার করে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা এখন চতুর্থ বছরে প্রবেশ করেছে। তবে বেইজিং তা করবে এমন কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
তবে চীন জোর দিয়ে বলেছে, তারা এই সংঘাতে নিরপেক্ষ। তারা নিয়মিতভাবে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ও পশ্চিমা দেশগুলোকে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সংঘাত দীর্ঘায়িত করার বিষয়ে অভিযোগও করেছে।