লুইসভিলে মোহাম্মদ আলীর জানাজায় মানুষের ঢল

প্রয়াত মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন।
মোহাম্মদ আলীর জানাজা পড়ান ইমাম জাইদ শাকির। তিনি বলেন, মোহাম্মদ আলীর ইচ্ছানুসারে জানাজার আয়োজন করা হয়, যা হলো একটি ‘শিক্ষণীয় মুহূর্ত’।
যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম আধ্যাত্মিক নেতা শেরম্যান জ্যাকসন বলেন, ‘আলীর চলে যাওয়ায় আমরা সবাই কিছুটা নিঃসঙ্গ বোধ করছি। কঠিন, ভারি, সুন্দর এবং জীবনের দৃঢ় কিছু চলে গেছে।’
মোহাম্মদ আলীর জানাজায় অংশ নিয়েছেন মুষ্টিযুদ্ধ সংগঠক ডন কিং, মানবাধিকারকর্মী জেসি জ্যাকসন, ইউসুফ ইসলামসহ (পূর্বনাম ক্যাট স্টিভেন) আরো অনেকে।
অনেক মার্কিন মুসলমান বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে লুইসভিলে যান এবং মোহাম্মদ আলীর জানাজায় অংশ নেন। আলীর জানাজায় অংশ নেওয়া অথবা টেলিভিশনে জানাজার সম্প্রচার দেখা যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা মনে করেন, এর ফলে মার্কিনিরা ইসলাম এবং এর বিধান সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
১৯৬৪ সালে আলী নেশনস অব ইসলামে যুক্ত হন। পরে তিনি ইসলামের মূলধারায় যুক্ত হন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে নিজের নাম ক্লেসিয়াস ক্লে থেকে পরিবর্তন করে মোহাম্মদ আলী হয়। ওই সময় তিনি বলেন, ক্লেসিয়াস ক্লে ‘দাস নাম’।
বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার কেন্টাকির লুইসভিলে মোহাম্মদ আলীর শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে ২০ হাজার মানুষের জন্য বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে আরো মানুষ অংশ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনসহ অনেক বিশ্বনেতার অংশ নেওয়ার কথা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পারিবারিক কারণে এই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারছেন না বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।
স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ফনিক্সের এক হাসপাতালে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়েছে।
১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে লাইট হেভিওয়েড বক্সিংয়ে সোনা জয়ের মধ্য দিয়ে মোহাম্মদ আলী খ্যাতি অর্জন করেন। এর পরপরই পেশাদার মুষ্টিযুদ্ধে লড়েন আলী। ‘দ্য গ্রেটেস্ট’ বলে খ্যাত এই মুষ্টিযোদ্ধা ১৯৬৪ সালে মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা সনি লিস্টনকে হারিয়ে মাত্র ২২ বছর বয়সে হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন। প্রথম মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা হিসেবে তিনবার হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন আলী। ৬১টি মুষ্টিযুদ্ধের ৫৬টিতেই জয় পান তিনি, এর মধ্যে ৩৭টিই ছিল নকআউট। ১৯৮১ সালে অবসর নেন মোহাম্মদ আলী।
১৯৯৯ সালে ক্রীড়া সাময়িকী ‘স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড’ মোহাম্মদ আলীকে ‘স্পোর্টসম্যান অব দ্য সেঞ্চুরি’ ঘোষণা করে। একই বছর বিবিসি তাঁকে ঘোষণা করে ‘স্পোর্টস পার্সোনালিটি অব দ্য সেঞ্চুরি’।