১১২ বছর বয়সে গ্রামপ্রধান!

তাঁর নাম নোরাজি দেবী। বয়স ১১২ বছর। তবে বয়সের কাছে হার মানেননি তিনি। আর তাই তো এই বয়সে এসে গ্রামপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
শুধু নির্বাচিত হয়েই ক্ষান্ত হননি নোরাজি দেবী। গ্রামপ্রধান হিসেবে নিজের দায়িত্বগুলোও পালন করে চলেছেন দারুণভাবে। বয়স তিন অঙ্কের ঘরে গেলেও গ্রামপ্রধানের যাবতীয় সামাজিক দায়-দায়িত্ব সামলে নিয়ে রীতিমতো সবাইকে চমকে দিয়েছেন তিনি।
চমকপ্রদ এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে। স্থানীয় ফুলপুর ব্লকের আদম মউ গ্রামের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন নোরাজি দেবী। ভোটের ময়দানে রীতিমতো বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন তিনি। মঞ্চে উঠে মাইক্রোফোনে বক্তব্যও রেখেছেন।
ভোট শেষে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নিজের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে ৫৪৫ ভোটে পরাজিত করে বিপুল ভোটে জয়ী হন নোরাজি দেবী।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১০ বছর ধরে এই অঞ্চলে নোরাজি দেবীর নাতি অমর সিং গ্রামপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু এবার এই আসনটি নারীদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় অমর সিং আর ভোটে দাঁড়াতে পারেননি। ফলে তাঁর জায়গায় ভোটে দাঁড়ান অমর সিংয়ের ঠাকুরমা (দাদি) নোরাজি দেবী। ১১২ বছর বয়সে ভোটে দাঁড়িয়ে রীতিমতো কিস্তিমাত করে দেন তিনি। বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি।
অবশ্য গ্রামপ্রধানের বয়স বেশি এই অভিযোগ তোলার সুযোগ পাচ্ছে না কেউ। কারণ গ্রামের উন্নয়ন নিয়ে নোরাজি দেবীর ভূমিকায় আঙুল তোলার বিন্দুমাত্র সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়রা জানান, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে একটা দিনও ঘরে বসে থাকেননি নোরাজি দেবী। রোজ সকালে লাঠিতে ভর দিয়ে এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের সুবিধা-অসুবিধার কথা জানার চেষ্টা করেছেন, তেমনি নিয়ম করে দলীয় বিভিন্ন কার্যকলাপেও উপস্থিত থেকেছেন তিনি। যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছেন মানুষের উপকার আর গ্রামের উন্নয়ন করতে। বয়সের ভার তাঁকে কোনোভাবেই কাবু করতে পারেনি। নোরাজি দেবী জানিয়েছেন, তাঁর প্রধান লক্ষ্য হলো গ্রামের এবং গ্রামবাসীদের উন্নয়ন করা।