বখাটের জ্বালায় ট্রেন থেকে শিশুসহ দম্পতির ঝাঁপ!

ট্রেনের মধ্যে একদল উত্ত্যক্তকারীর (ইভটিজার) হাত থেকে রক্ষা পেতে নয় মাসের শিশুকে নিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়েছেন এক দম্পতি। গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আলিপুরদুয়ার জংশনের কাছে ঘটনাটি ঘটেছে।
এ মুহূর্তে আলিপুরদুয়ার রেল হাসপাতালে ওই দম্পতির চিকিৎসা চলছে। তাঁরা হলেন আশরাফুল হোসেন ও দরদি বিবি। তাঁদের বাড়ি কোচবিহারের দিনহাটা এলাকায় বলে জানা গেছে।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ রেলস্টেশন থেকে মহানন্দা এক্সপ্রেসের অসংরক্ষিত কামরায় ওঠেন ওই স্বামী-স্ত্রী। ওই একই কামরায় দিল্লি থেকে ২৪-২৫ জনের একদল যুবক ওঠে। ট্রেন ছাড়ার পর থেকেই তারা উত্ত্যক্ত করা শুরু করে ওই দম্পতিকে। আশরাফুল হোসেন প্রতিবাদ জানালে ওই যুবকরা তাদের চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় পাশে বসে থাকা সহযাত্রীরাও এগিয়ে আসেনি বলেও জানা গেছে।
কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, একপর্যায়ে যুবকদের উৎপাত সহ্যের সীমা পার হয়ে যাওয়ায় হাসিমারা স্টেশনে এসে দরদি বিবি কর্তব্যরত রেল পুলিশকে বিষয়টি জানান। কিন্তু রেল পুলিশের তরফ থেকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এর পর যুবকরা ওই নারীকে ধর্ষণ করার হুমকি দিতে থাকে। তাঁর স্বামীকে বেঁধে রেখে তারা ধর্ষণ করবে বলেও হুমকি দেয়।
জানা গেছে, সম্মান বাঁচাতে আলিপুরদুয়ারের রাজাভাত খাওয়া স্টেশনের অদূরে হাতির করিডোর নামে জায়গায় ছেলেশিশুকে নিয়ে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন স্বামী-স্ত্রী। রাতে স্থানীয় বনকর্মীরা বনাঞ্চলে পাহারা দেওয়ার সময় রেললাইনের ধারে ওই দম্পতিকে পড়ে থাকতে দেখেন। তার পরে তাঁরাই কোলের শিশুসহ ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে স্থানীয় রেল পুলিশের হাতে তুলে দেন।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান ওই দম্পতি। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের খোঁজে এবারে অভিযান শুরু করেছে রেল পুলিশ।
এ ব্যাপারে রাজ্যের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক এনসি শর্মা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, গতকাল রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। মহানন্দা এক্সপ্রেসে এ ধরনের ঘটনা আগে ঘটেনি। উত্তর-পূর্ব রেলের চিফ সিকিউরিটি আধিকারিক মিস্টার নেগির নেতৃত্ব বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। আজ থেকে এই ট্রেনে আরপিএফ জওয়ান মোতায়েন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এনসি শর্মা আরো জানান, ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়া দম্পতি ও তাঁদের সন্তান এখন সুস্থ।