বিশ্ব হার্ট দিবস
খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে

আজ বিশ্ব হার্ট দিবস। এবছরের প্রতিপাদ্য ‘একটিও স্পন্দন যেন না হারায়’। হৃদ্রোগ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে দিনটি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনসহ মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মহসিন আহমদ। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ফখরুল ইসলাম শাহীন।
অধ্যাপক ডা. মহসিন আহমদ বলেন, আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও লাইফস্টাইলই মূল সমস্যা। আমরা প্রচুর কার্বোহাইড্রেট ও চর্বি খাই কিন্তু ব্যায়াম বা হাঁটার অভ্যাস নেই। কাজের চাপ ও অনিয়মিত ঘুমের কারণে শরীরে লিপিড ও কোলেস্টেরল জমে রক্তনালী ব্লক হয়ে যায়। যদি আমরা নিয়মিত হাঁটতাম, এই লিপিড বার্ন হতো এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে যেত।
অধ্যাপক ডা. মহসিন আহমদ আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনের সময় যে সাংবাদিক মারা গেলেন খোঁজ নিয়ে দেখেন তিনি চার ঘণ্টাও ঘুমাননি। আবার জাকসুর যে শিক্ষক মারা গেলেন তিনি তিন ঘণ্টা ঘুমিয়েছেন।
নিজের প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, আমি সারাদিন কাজ করি, বিশ্রামের সময় পাই না। আমরা সকালে খাই, আবার রাত দুইটার সময় খেয়ে শুয়ে পড়ি। এই অস্বাস্থ্যকর রুটিন হৃদরোগের বড় কারণ।
ডায়াবেটিসকে তিনি ‘প্যান্ডেমিক’ হিসেবে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ ও আশপাশের অঞ্চলে ডায়াবেটিস দ্রুত বাড়ছে। প্রচুর ভাত ও চিনি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের হার বাড়ছে, যা হার্টের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি করে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তরুণদের মধ্যে ধূমপান ও ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকের ব্যবহার।
ফাস্টফুডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা এখন ফুড ডেলিভারির ওপর নির্ভরশীল। এসব খাবারে খারাপ কোলেস্টেরল বেশি থাকে, যা রক্তনালীতে প্লাক জমিয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাদা খাবার যেমন ভাত, চিনি, পনির, দুধের সর—এসব কমাতে হবে। লাল বা আঁশযুক্ত খাবার ও শাকসবজি বেশি খেতে হবে। গরুর মাংস কম খেতে হবে। মুরগি বা মাছ তুলনামূলক বেশি খেতে হবে।
এ ছাড়া সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট হাঁটা জরুরি (প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে ৫ দিন)। সময় না পেলে কর্মস্থলে ছোট ছোট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন—লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার, অফিসের ছোট কাজ নিজে করা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, এর আগে প্রথম পর্বে কথা হয়েছিল হার্টের ঝুঁকিতে খাদ্যাভ্যাস, ডায়াবেটিস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন নিয়ে।
তৃতীয় পর্বে থাকবে
প্রতিরোধই প্রধান : জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন এখনই