বিশ্ব হার্ট দিবস
তরুণ বয়সেই বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি

আজ বিশ্ব হার্ট দিবস। এবছরের প্রতিপাদ্য ‘একটিও স্পন্দন যেন না হারায়’। হৃদ্রোগ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে দিনটি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর আড়াই লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে—যা দেশের মোট মৃত্যুর প্রায় ৩৪ শতাংশ। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর মোট মৃত্যুর ৩৩ শতাংশই ঘটে আকস্মিক হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে।
এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মহসিন আহমদ। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ফখরুল ইসলাম শাহীন।
প্রথম পর্বে কথা হয় তরুণদের হৃদরোগের ঝুঁকি নিয়ে।
অধ্যাপক ডা. মহসিন আহমদ বলেন, আমাদের আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন হলেও একই সঙ্গে বায়ুদূষণ ভয়াবহভাবে বাড়ছে। ধূমপান, তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার ও মাদক গ্রহণও বাড়ছে দ্রুত। এগুলো হৃদ্রোগ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
অধ্যাপক ডা. মহসিন আহমদ আরও বলেন, উদ্বেগের বিষয় হলো বাংলাদেশে ৩০ থেকে ৪০ বছরের তরুণদের মধ্যেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সম্প্রতি মাত্র ৩০–৪০ বছরের দুই তরুণ হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন। অথচ উন্নত দেশ যেমন জাপান বা আমেরিকায় এ বয়সে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা খুবই বিরল।
এসময় সাম্প্রতিক সময়ে অধ্যাপক ডা. মহসিন সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করেন—সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌসের কথা। তিনি বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহকালে আমাদের একজন তরুণ সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম অজ্ঞান হয়ে গেলেন, হাসপাতাল নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। এরপর ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচনে ভোটের কাজের সময় শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস অজ্ঞান হয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। দুজনের বয়স কিন্তু ৩০ থেকে ৪০-এর কোঠায়। তারা দুজনেই কাজ করছিলেন। অ্যাকটিভ পার্সন অবশ্যই এবং দুজনে কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। আবার দেখেন ক্রিকেটার তামিম ইকবাল তিনি কিন্তু বেচে গেলেন। তার সহকর্মীর পদক্ষেপের কারণে।
তাই এবারের স্লোগান ডোন্ট মিস ইউ বিট মানে আপনি কোন বিট মিস করবেন না প্রতিটি বিটই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বলি যে দুই তরুণ মারা গেছেন তারা কোনো না কোনো বিট মিস করেছে আর তামিম সেটা করেনি বলেই বেচে গেছে। এই চিকিৎসক সতর্ক করে বলেন, হঠাৎ মৃত্যু বলে কিছু নেই। শরীর আগে থেকেই সংকেত দেয়, কিন্তু আমরা তা উপেক্ষা করি। পরিশ্রমে অতিরিক্ত ক্লান্তি, বুকে চাপ, অস্বাভাবিক ধড়ফড়—এসবই বিপদের সংকেত। এগুলো উপেক্ষা করা মানেই স্পন্দন মিস করা। এতে আর মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়বে।
দ্বিতীয় পর্বে থাকছে
অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনই হার্ট আটাকের ঝুঁকি তৈরি করে