অনলাইনে পুতিনবিরোধী কনটেন্ট খুঁজলেই গুনতে হবে জরিমানা

রাশিয়ায় অনলাইনে সরকারবিরোধী বা ‘চরমপন্থি’ বিষয়বস্তু খোঁজা এখন দণ্ডনীয় অপরাধ। আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) একটি নতুন আইনে স্বাক্ষর করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, যার ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা যদি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ‘চরমপন্থি’ বলে বিবেচিত কোনো ওয়েব পেজ, বই, শিল্পকর্ম বা মিউজিক অ্যালবাম খোঁজেন, তবে তাদের জরিমানা গুনতে হবে। এমনকি পুতিনের সমালোচনামূলক যেকোনো ওয়েবসাইটও এর অন্তর্ভুক্ত। খবর এএফপির।
সমালোচকরা রাশিয়ার এই আইনটিকে চিন্তাভাবনা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আরও একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখছেন। নতুন এই আইন অনুযায়ী, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে ‘চরমপন্থি উপাদান’ হিসেবে চিহ্নিত বিষয়বস্তু খুঁজে বের করবে বা তাতে ঢুকবে, তাদের ৫ হাজার রুবেল (প্রায় ৮ হাজার টাকা) পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
রাশিয়ার সরকারি তালিকায় পাঁচ হাজারেরও বেশি এমন ‘চরমপন্থি’ বিষয়বস্তু রয়েছে। এর মধ্যে ইউক্রেনের প্রশংসা করা গান, নারীবাদী রক ব্যান্ড ‘পুসি রায়টের’ ব্লগ পোস্ট এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমালোচনামূলক ওয়েবসাইটগুলোও অন্তর্ভুক্ত।
রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘স্টেট ডুমা’র আইনপ্রণেতারা এই মাসের শুরুতে বিলটিকে সমর্থন করেছিলেন। যদিও দুটি সংসদীয় গোষ্ঠী এর বিরোধিতা করেছিল, যা রাশিয়ায় বিরল ঘটনা।
রাশিয়ার বিরোধী রাজনীতিবিদ বরিস নাদেজদিন এই বিলের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদের আয়োজন করেছিলেন। তিনি এটিকে জর্জ অরওয়েলের ‘১৯৮৪’ উপন্যাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলছেন, ‘এই আইনটি চিন্তা করার অপরাধের শাস্তি দেয়।’

নতুন আইনে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের (ভিপিএন) বিজ্ঞাপনও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে সিম কার্ড স্থানান্তরের জন্যও জরিমানা আরোপ করা হয়েছে। কারণ এই দুটি উপায় ব্যবহার করেই অনেকে নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটগুলোতে প্রবেশ করেন।
২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে রাশিয়া সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং অনলাইনে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে সীমিত করেছে। তারা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামসহ বহু পশ্চিমা সাইটে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিয়েছে।