ত্রাণ-সেনা প্রত্যাহার মতবিরোধে থমকে গেছে গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারে চলমান পরোক্ষ আলোচনা অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। তিন দিনের নিবিড় আলোচনার পরও মানবিক ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়া ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার— এই দুটি ইস্যুতে দুই পক্ষ কোনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা। খবর বিবিসির।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকের পর একটি চুক্তি নিয়ে আশার সঞ্চার হলেও হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মূল ইস্যুতে মতবিরোধ রয়ে গেছে। নেতানিয়াহু অবশ্য বলছেন, তাদের সর্বশেষ বৈঠক জিম্মি মুক্তির প্রচেষ্টার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। একইসঙ্গে হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা নির্মূল করা, যাতে ইসরায়েলকে হুমকি মুক্ত রাখা যায়।
ইসরায়েল দাবি করছে, এখনও ৫০ জন জিম্মি হামাসের হাতে রয়েছে। যার মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মার্কিন দূতের আশাবাদ বনাম ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ
গত মঙ্গলবার মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, দোহায় চলমান আলোচনায় মাত্র ‘একটি’ অমীমাংসিত ইস্যু বাকি আছে। এই সপ্তাহের শেষ নাগাদ ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একটি চুক্তি হতে পারে। তবে আজ একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, আলোচনা থমকে আছে।
ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, ইসরায়েলি প্রতিনিধি দল জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে গাজায় মানবিক সাহায্য অবাধে প্রবেশের অনুমতি দিতে রাজি নয়। ইসরায়েল সাহায্য বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনকে (জিএইচএফ) দায়িত্ব দিতে চায়। তবে সম্প্রতি ফাউন্ডেশনের নিয়ন্ত্রণে থাকা কেন্দ্রগুলো থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া গত ১৮ মার্চ থেকে গাজার দখলকৃত এলাকা থেকে সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আসছে ইসরায়েল। যা আলোচনার অগ্রগতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে চালানো হামলার জবাবে গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত অন্তত ৫৭ হাজার ৫৭৫ জন নিহত হয়েছেন। গাজার বেশিরভাগ জনসংখ্যা একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ৯০ শতাংশের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যসেবা, পানি, স্যানিটেশন, খাদ্য, জ্বালানি, ঔষধ ও আশ্রয়ের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।