আজ থেকে দিল্লিতে ৬২ লাখ গাড়িতে মিলবে না পেট্রোল-ডিজেল

দিল্লির পেট্রোল পাম্পগুলোতে আজ থেকে ৬২ লাখ গাড়িতে পেট্রোল ও ডিজেল মিলবে না। বায়ুদূষণ রোধে দিল্লি সরকারের বড় পদক্ষেপ হিসেবে ১৫ বছরের বেশি পুরনো পেট্রোল চালিত গাড়ি ও ১০ বছরের বেশি পুরনো ডিজেল চালিত গাড়িতে জ্বালানি বিক্রি বন্ধের নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে। পেট্রোল পাম্পগুলোতে দেখা যাচ্ছে ‘মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ’ পোস্টার। খবর এনডিটিভির।
দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে যানবাহনই দিল্লির ৫১ শতাংশ বায়ুদূষণের জন্য দায়ী, গত নভেম্বরে প্রকাশিত সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের (সিএসই) বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে আসে।
এ পরিস্থিতিতে এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট কমিশন (সিএকিউএম) স্ট্যাচুটরি ডিরেকশন নম্বর ৮৯ জারি করে দিল্লি-এনসিআরের সব ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির (মালবাহী, কমার্শিয়াল, দুই চাকার যান) বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয়।
এতে শুধু দিল্লিতেই প্রায় ৬২ লাখ গাড়ি (৬১ লাখ ১৪ হাজার ৭২৮) এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবে। হরিয়ানায় সাড়ে ২৭ লাখ, উত্তর প্রদেশে ১২ লাখ ৬৯ হাজার এবং রাজস্থানে ৬ লাখ ২০ হাজার পুরনো গাড়ি আছে।
কিভাবে কার্যকর হবে নিষেধাজ্ঞা
দিল্লি পরিবহন বিভাগ পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ ও মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে পরিকল্পনা করেছে। পুলিশের টিম পেট্রোল পাম্প নম্বর ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত এবং পরিবহন বিভাগের ৫৯টি টিম পেট্রোল পাম্প ১০১ থেকে ১৫৯ পর্যন্ত নজরদারি চালাবে।
৩৫০টি নির্দিষ্ট পেট্রোল পাম্পে একজন করে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতি পাম্পে অতিরিক্ত দুইজন পুলিশ রাখা হবে।
মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি ধরতে ৪৯৮টি পেট্রোল পাম্পে অটোমেটিক নম্বর প্লেট রিকগনিশন (এএনপিআর) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এগুলো ভাহন ডাটাবেসের সঙ্গে সংযুক্ত থেকে গাড়ির নম্বর যাচাই করে পাম্প অপারেটর ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সতর্ক করবে, যাতে গাড়ি আটক বা স্ক্র্যাপ করা যায়।

মাঠপর্যায়ে উদ্বেগ ও বাস্তবতা
দিল্লির পেট্রোল ব্যবসায়ী নিশ্চল সিংহানিয়া বলেন, “এ ধরনের বড় পদক্ষেপের আগে অন্তত একটি ট্রায়াল রান প্রয়োজন ছিল। ৩০, ৬০, ৯০ দিন পর টিম চলে গেলে আমরা কীভাবে সামাল দেবো? এনসিআর জুড়ে একসাথে কার্যকর করা উচিত।”
কমিউটার মোহিত বলেন, “১৫-৩০ দিনের ট্রায়াল রান হলে ভালো হতো। অনেকেই এই উদ্যোগ সম্পর্কে জানেন না। এক সপ্তাহের ট্রায়াল সচেতনতা বাড়াত।”
দিল্লির গ্রিন পার্কের এক পেট্রোল পাম্প ঘুরে এনডিটিভি দেখেছে, সেখানকার কর্মীরা এখনও বুঝতে পারেননি কীভাবে এই নির্দেশনা কার্যকর করবেন।
এক দুই চাকার যানচালক বলেন, “অনেক পুরনো গাড়ি আছে, যেগুলো ভালোভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা। শুধু বছরের ওপর ভিত্তি করে জ্বালানি বন্ধ করা উচিত নয়। পিওসিসি (পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল সার্টিফিকেট) থাকতে হবে কিনা, তারও স্পষ্ট নির্দেশনা দরকার।”