দিনের পর দিন ছাত্রকে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে বাধ্য করতেন শিক্ষিকা

ভারতের মুম্বাইয়ের এক স্বনামধন্য স্কুলের ৪০ বছর বয়সী এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে গত এক বছর ধরে ১৬ বছর বয়সী এক ছাত্রকে একাধিকবার যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ওই নারী বিবাহিত এবং তার সন্তানও রয়েছে। খবর এনডিটিভির।
বুধবার (২ জুলাই) পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পিওসিএসও) আইন, জুভেনাইল জাস্টিস (কেয়ার অ্যান্ড প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন) আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত নারী ইংরেজি শিক্ষক। ছাত্রটি যখন একাদশ শ্রেণিতে পড়তো, তখন থেকেই তিনি তাকে পড়াতেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠানের জন্য একটি ডান্স গ্রুপ তৈরির মিটিং চলাকালীন তিনি ওই কিশোরের প্রতি আকৃষ্ট হন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি ছাত্রটিকে যৌন ইঙ্গিতও দেন।
শুরুতে ছাত্রটি এই সম্পর্ক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও শিক্ষিকা তার এক নারী বন্ধুর (যিনি স্কুলের নন) সাহায্য নেন। অভিযুক্ত শিক্ষিকার ওই বন্ধু ছাত্রটিকে বোঝান, বয়স্ক নারী ও কিশোর ছেলেদের মধ্যে সম্পর্ক ‘খুবই সাধারণ’ হয়ে উঠেছে। এরপরই ছাত্রটি শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হয়।
পরবর্তীতে শিক্ষিকা একটি গাড়িতে করে ছেলেটিকে তুলে নেন এবং একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক তাকে বিবস্ত্র করে যৌন নির্যাতন করেন। পুলিশ জানিয়েছে, যখন ছাত্রটি মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন বোধ করতে শুরু করে। তখন শিক্ষিকা তাকে উদ্বেগ কমানোর ট্যাবলেট দিতেন। এই ঘটনায় ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।
আরেকজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এই শিক্ষিকা ছাত্রটিকে প্রায়শই মদ্যপান করিয়ে দক্ষিণ মুম্বাই এবং বিমানবন্দরের কাছের পাঁচতারা হোটেলগুলোতে নিয়ে যেতেন। যেখানে তিনি তাকে জোরপূর্বক যৌন সম্পর্কে বাধ্য করতেন।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ছাত্রটির পরিবার তার আচরণে পরিবর্তন লক্ষ্য করার পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিষয়টি সামনে আসে। তবে প্রথমে পরিবার বিষয়টি গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারা ভেবেছিল স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে হওয়ার পর শিক্ষিকা তাকে আর বিরক্ত করবেন না।

ছাত্রটি চলতি বছরের শুরুতে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে স্কুল ছেড়ে দেয়। কিন্তু শিক্ষিকা আবারও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপরেই কিশোরের পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হয় এবং শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এই ঘটনা মুম্বাই শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।