বউকে বন্ধক! অতঃপর ধারদাতাকে খুন

মাত্র ৩০ হাজার রুপির জন্য বউ বন্ধক! পরে বউ ফেরত দিতে বাড়তি অর্থ দাবি করায় ধারদাতাকে খুন। গল্প, উপন্যাস বা চলচ্চিত্রে এমন ঘটনা দেখা যায়। তবে বাস্তবেই এমনটি ঘটেছে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের যমুনানগর শহরে। সম্প্রতি একটি খুনের ঘটনার তদন্তে বিষয়টি জানতে পেরেছে স্থানীয় পুলিশ।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, মোহাম্মদ গোলাম (৩৫) নামের যমুনানগরের এক বাসিন্দার খুনের ঘটনা তদন্ত করছিল পুলিশ। টানা দুই সপ্তাহ তদন্ত শেষে পুলিশ জানতে পারে, বন্ধুর স্ত্রীকে বন্ধক রেখে টাকা ধার দেওয়ার সংশ্লিষ্ট কারণেই সে খুন হয়েছে।
যমুনানগর পুলিশ জানিয়েছে, বিহার রাজ্যের আরিয়া জেলা থেকে আসা মোহাম্মদ গোলাম আড়াই বছর ধরে যমুনানগরে থিতু হওয়ার চেষ্টা করছিল। চলতি বছর জানুয়ারিতে গোলাম তাঁর এক বন্ধু সাবির আলিকে ৩০ হাজার রুপি ধার দেয়। পেশায় নাশতা ও শ্রমিক সরবরাহকারী সাবির ওই ধারের জন্য তাঁর বউ সালমাকে গোলামের কাছে বন্ধক রাখে। সালমাকে রাখা হয় অর্জুননগরে গোলামের বাড়িতে। তুলা প্রক্রিয়াজাতকরণ ও লেপ-তোশকের ব্যবসায়ী গোলাম তাঁর বন্ধুর স্ত্রী সালমার রান্না করা খাবার খেত।
পুলিশ জানায়, গত মার্চে গোলাম তাঁর বন্ধুর স্ত্রীকে নিয়ে বিহারের গ্রামের বাড়িতে যায় এবং হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। পরে সেপ্টেম্বরে তাঁরা আবার যমুনানগরে ফিরে আসে। ওই সময় তুলা প্রক্রিয়াজাতকরণ ও লেপ-তোশক বানানোর ব্যবসা পুনরায় চালু হয়। বন্ধুর স্ত্রী বাড়িতে এবং নিজের ব্যবসা এভাবেই সবকিছু চলছিল গোলামের। তবে ৩১ অক্টোবর তাঁকে বাড়ির বাইরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
যমুনানগর পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী, ভারী কোনো বস্তু বা মুগুরের আঘাতে গোলামের মৃত্যু হয়। আর সাবিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, তিন মাস আগে গোলামকে ৩০ হাজার রুপি ফেরত দিয়ে বউ ফিরিয়ে নিতে চায় সাবির। তবে গোলাম বন্ধুর স্ত্রীকে ফিরিয়ে না দিয়ে সুদ হিসেবে আরো ২০ হাজার রুপি দাবি করে। গত ৩১ ডিসেম্বর বাড়তি ২০ হাজার রুপি দিয়ে বউ ফেরত চায় সাবির। এর পরও সালমাকে ফিরিয়ে দিতে চায়নি গোলাম। এই পরিপ্রেক্ষিতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গোলামকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাবির।
যমুনানগর পুলিশের ডিএসপি রাজিন্ত্রর কুমার বলেন, আখতার ও গৌরভ নামের দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গোলামকে পিটিয়ে হত্যা করেছে সাবির। এই ঘটনায় সাবির, তাঁর স্ত্রী সালমা ও আখতারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গৌরভকে ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
ডিএসপি রাজিন্ত্রর কুমার বলেন, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সাবিরও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাজের উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছে। ওই সময় তার সঙ্গেই ছিল তিন সন্তান। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সাবিরের স্ত্রীও জড়িত। গোলামকে তাঁর স্বামীর সঙ্গে বাড়ির বাইরে পাঠানোর কাজটি করেছে সালমা।