বাংলাদেশ-ভারত নৌবাণিজ্য সহজ হলো

৬৮ বছরের অবসান ঘটিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে সোজা পথে নৌবাণিজ্য সংক্রান্ত প্রোটোকলে সই করলেন দুই দেশের নৌ সচিব। স্থানীয় সময় রোববার নয়াদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে উপকূলবর্তী নৌবাণিজ্য সংক্রান্ত এই প্রোটোকলে সই করা হয়।
এ চুক্তির মাধ্যমে পণ্যবাহী নৌযান ভারতের হলদিয়া, কলকাতা, পারাদ্বীপ কিংবা করিমগঞ্জ বন্দর থেকে রওনা দিয়ে বঙ্গোপসাগর হয়ে কম সময়েই বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, আশুগঞ্জ কিংবা মংলা বন্দরে নোঙর করবে।
এর আগে ভারতের পূর্ব উপকূলের বন্দরগুলো থেকে পণ্যবাহী নৌযান বঙ্গোপসাগর হয়ে ভারত মহাসাগর পাড়ি দিতে হতো। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর কিংবা কলম্বো সমুদ্রবন্দরে সেই পণ্য খালাস করা হতো। সেখান থেকে আবার সেসব পণ্য বাংলাদেশের জাহাজে তুলে নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের নৌবন্দরগুলোতে পৌঁছাত। এই ব্যবস্থার ফলে একদিকে যেমন দীর্ঘমেয়াদি সময় ব্যয় হতো তেমনি পরিবহন খরচটাও বেড়ে যেত দ্বিগুণেরও বেশি। তা ছাড়া এই দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার কারণে এ ধরনের বাণিজ্যে লাভও হতো কম, অনেক সময় লসও হতো।
ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, গতকাল ভারত-বাংলাদেশের নৌসচিবরা নয়াদিল্লিতে এক চুক্তির মাধ্যমে অল্প সময়ে সোজা পথে দুই দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্যের সিদ্ধান্ত নেন। খুব শিগগিরই এই নতুন নৌপথ খুলে দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।
এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরের সময় ভারত-বাংলাদেশ নৌপথে অল্প সময়ে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়টিতে শীর্ষ নেতৃত্বের চুক্তি হয়।
এ ছাড়া আজ সোমবার থেকে দিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশের নৌসচিব পর্যায়ের তিনদিনের বৈঠক শুরু হবে। বৈঠকে নতুন এই নৌপথে পণ্য বাণিজ্য, বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, দেশভাগের পর পাকিস্তানের সঙ্গে নৌবাণিজ্য নিয়ে সেই অর্থে কোনো যোগাযোগ তৈরি হয়নি ভারতের। পূর্ব পাকিস্তানের (অধুনা বাংলাদেশ) জাহাজ ভারতে কিংবা ভারতের পণ্যবাহী জাহাজ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তারপর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও সেই ব্যবস্থা থেকেই যায়। অবশেষে জটিল এই নৌপরিবহন ব্যবস্থা সরলীকরণ হতে চলেছে।