এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচে ত্রুটি মেলেনি

বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের (এফসিএস) লকিং মেকানিজমে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া। টাটা গ্রুপের মালিকানাধীন এয়ারলাইন্সটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিমানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবগুলো বোয়িং ৭৮৭ বিমানে সতর্কতামূলকভাবে এই পরীক্ষা চালানো হয়। খবর এনডিটির।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ) সোমবার (১৪ জুলাই) এক নির্দেশনায় ২১ জুলাইয়ের মধ্যে নির্দিষ্ট বোয়িং বিমানগুলোর এফসিএস পরীক্ষা করতে বলেছিল। এরপরই এয়ার ইন্ডিয়া এই পদক্ষেপ নেয়।
এর পেছনে রয়েছে আহমেদাবাদে একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার দুর্ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন, যেখানে দেখা গেছে, বিমানের উড্ডয়নের ঠিক পরপরই দুই ইঞ্জিনের ফুয়েল কাট-অফ সুইচ মাত্র ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে 'রান' থেকে 'কাট-অফ' অবস্থায় চলে যায়। এতে ইঞ্জিন দুটির শক্তি হারিয়ে বিমানটি ৩২ সেকেন্ডের মধ্যেই ভেঙে পড়ে এবং ২৬০ জন নিহত হন।
এয়ার ইন্ডিয়ার একজন কর্মকর্তা জানান, “আমাদের সমস্ত বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানে বোয়িংয়ের রক্ষণাবেক্ষণ পরিকল্পনা অনুযায়ী থ্রটল কন্ট্রোল মডিউল (টিসিএম) পরিবর্তন করা হয়েছে। এফসিএস এই মডিউলেরই অংশ।”
তিনি আরও বলেন, “গত সপ্তাহান্তে আমাদের প্রকৌশল দল সকল বোয়িং ৭৮৭ বিমানের এফসিএস-এর লকিং মেকানিজম পরীক্ষা করে এবং কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি।”
এই তথ্য এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট অপারেশনস টিম থেকে পাইলটদের কাছে একটি অভ্যন্তরীণ বার্তার মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
এর আগে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের প্রায় সবগুলো বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানেরও একই ধরনের পরীক্ষা করা হয় এবং সেগুলোর মাঝেও কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
ডিজিসিএ’র এই নির্দেশনার ভিত্তি ছিল মার্কিন এফএএ-এর একটি বুলেটিন, যা ২০১৮ সালে জারি করা হয়। সেখানে কিছু বোয়িং ৭৩৭ মডেলের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচের লকিং ফিচার অকার্যকর হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিল।
তবে সেই সময় এফএএ বুলেটিনটি "আবশ্যিক নয়" বলে চিহ্নিত হওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়া তখন এই পরীক্ষা চালায়নি বলে জানা গেছে। আর সেই একই ধরনের সুইচ আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত হওয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানেও ব্যবহার করা হয়েছিল।

দুর্ঘটনা তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্র্যাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) বলেছে, উড্ডয়নের মাত্র ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যায়। এরপর জরুরি পরিস্থিতিতে র্যাম এয়ার টারবাইন (আরএটি) ব্যবহার করে হাইড্রোলিক শক্তি জোগাড়ের চেষ্টা করা হয়, কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না।