ভয় দেখিয়ে ৭৮ কোটি টাকা নিল হ্যাকার!

ভারতের দুই কোম্পানিকে ভয় দেখিয়ে এক কোটি ডলার (৭৮ কোটি টাকা) হাতিয়ে নিয়েছে হ্যাকারদের একটি দল।
প্রথমে ওই দুই কোম্পানির বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে হ্যাকাররা। এর পর কোম্পানি দুটিকে জানায়, তারা প্রত্যেকে যদি পাঁচ মিলিয়ন করে অর্থ না দেয়, তাহলে তাদের সব তথ্য প্রকাশ করে দেওয়া হবে।
গত মে মাসে এ ঘটনা ঘটে। তবে এর দুই-তিন বছর আগে থেকেই কোম্পানি দুটির ওপর নজর রাখছিল হ্যাকাররা। কোম্পানি দুটির সব তথ্য নিয়ে নেওয়ার পর প্রতিষ্ঠান দুটির কাছে চাঁদা দাবি করে তারা। বলা হয়, চাহিদামতো অর্থ না দিলে প্রতিষ্ঠান দুটির সব তথ্য ফাঁস করে দেওয়া হবে।
প্রথমবারের মতো ভারতে কোনো বড় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এত বড় অঙ্কের চাঁদা আদায় করল হ্যাকাররা। এমনকি তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার ভয়ে চাঁদার হুমকির কথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোও হয়নি। অবশ্য পরে ঘটনার তদন্তে নিজেদের উদ্যোগে গোয়েন্দা নিয়োগ করে প্রতিষ্ঠান দুটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্রের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশ থেকে এই হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় কোম্পানি দুটিকে বলা হয়, যদি তারা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ না দেয়, তাহলে তাদের বিভিন্ন গোপন তথ্য ভারত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
কিছুদিন আগে ভারতের জ্বালানিসহ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কিছু গোপন নথি চুরি হয়। এ নিয়ে হৈচৈ চলাকালে প্রতিষ্ঠান দুটিকে হুমকি দেয় হ্যাকাররা। সূত্রটি জানান, এমন একটি সময়ের জন্যই অপেক্ষা করছিল হ্যাকাররা। কয়েক বছর ধরে এ বিষয়ের যাবতীয় তথ্য নিজেদের কাছে সংগ্রহ করে রাখছিল তারা।
হ্যাকারদের সংগ্রহ করা তথ্যের মধ্যে ছিল বিভিন্ন সংবেদনশীল আর্থিক লেনদেনের তথ্য। যদিও এই হ্যাকিং ও চাঁদাবাজির কথা প্রতিষ্ঠান দুটির পক্ষ থেকে সরকারকে জানানো হয়নি, তবে সম্প্রতি সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছেন এমন কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারেন।
হ্যাকিং কীভাবে হয়েছে, তা জানতে চাইলে একজন কর্মকর্তা জানান, একটি কোম্পানির ই-মেইল সিস্টেমের মাধ্যমে হ্যাক করা হয়। অন্যটির আইটি সিস্টেমের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় হ্যাকাররা। তার পর সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য চুরি করে রাখে। বটনেট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই হ্যাকিং করা হয়। বটনেট হলো সেই ধরনের আক্রান্ত কম্পিউটার, যা হ্যাকাররা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এসব ক্ষেত্রে একটি প্রতিষ্ঠানে বসে কর্মকর্তারা কম্পিউটারে কী করছেন বা মাউস নেড়ে কোথায় যাচ্ছেন, সেটাও নিজের ঘরে বসেই দেখতে পায় হ্যাকাররা।
সম্প্রতি ভারতের দুটি ব্যাংকও আক্রমণ করে হ্যাকাররা। তবে এসব ব্যাংক থেকে কোনো টাকা হ্যাকারদের দেওয়া হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।