দ. আফ্রিকাকে হারিয়ে ট্রফি জিতল বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়েতে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরু থেকেই অনবদ্য পারফর্ম করছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। একের পর এক জয় তুলে নিচ্ছিল যুব টাইগাররা। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করেছিল ফাইনাল। ট্রফি জয়ের সেই মঞ্চে ব্যাট-বলে জ্বলে উঠেছে আজিজুল তামিমের দল। ২২ গজের লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ট্রফি নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ রোববার (১০ আগস্ট) প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৫৯ রান করে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জবাব দিতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ২৩৬ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এতে ৩৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের ৭ ম্যাচের ৫টিতেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
রান তাড়ায় নেমে আক্রমণাত্মক শুরু করেছিল প্রোটিয়া যুবারা। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৯ রান তুলেছিল তারা। তবে দ্রুতই নিজেদের গুছিয়ে নেয় বাংলাদেশ। পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ার আগেই আঘাত হানেন আল ফাহাদ। ফেরান দুই ওপেনার জোরিখ ভ্যান শালকউইক (২২ বলে ১৯) আর আদনান ল্যাগাডিয়েনকে (৩১ বলে ৪০)।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। নিয়মিত বিরতিতে তুলে নিয়েছে উইকেট। যারাই মাথা ব্যাথার কারণ হওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদেরকেই ফিরিয়েছেন টাইগার যুবারা। তিনে নেমে অধিনায়ক মোহাম্মদ বুলবুলিয়া (৪৩ বলে ৩১) প্রতিরোধের চেষ্টা করলে তাকে ফেরান রিজান হাসান।
মিডল অর্ডার ব্যাটারদের ঠিকমতো উইকেটে দাঁড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশি বোলাররা। শেষদিকে প্রতিরোধ গড়েন ব্যান্ডলি এমবাথা ও এনটানডো সনি। অষ্টম উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়ে প্রোটিয়াদের আশা দেখাচ্ছিলেন এই দুজন।
৩২ বলে ৩৪ রান করা এনটানডো সনিকে ফিরিয়ে আশায় মরিচা ধরিয়ে দেন রিজান। পরের ওভরে বোলিংয়ে ফেরান এমবাথাকেও। ৪০ বলে ২৯ রান করে ফিরলে নিভে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ আশাও। এই ওভারেই প্রোটিয়াদের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন রিজান। ওভারের চতুর্থ বলে রানের খাতা খোলার আগেই ফেরান বায়ান্ডা মাজেলাকে।
এই উইকেট দিয়ে এই টুর্নামেন্টে প্রথম টাইগার বোলার হিসেবে ‘ফাইফার’ তুলে নেন রিজান। এর আগে টাইগার বোলাররা কয়েকবার ৪ উইকেট পেলেও পাঁচ উইকেট পেলেন এবারই প্রথম।
৮.৪ ওভারে ৩৪ রান খরচে ৫ উইকেট শিকার করেছেন রিজান হাসান। ৩ উইকেট পেয়েছেন আল ফাহাদ আর ২টি উইকেট গেছে স্বাধীন ইসলামের ঝুলিতে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও সেটা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। ৬৫ রানের মধ্যেই বিদায় নেন টপঅর্ডারের তিন ব্যাটার জাওয়াদ আবরার (৪২ বলে ২১), রিফাত বেগ (২২ বলে ১৬) আর আজিজুল হাকিম তামিম (২৮ বলে ৭)।
দলকে ধ্বস্তুপে পরিণত হতে দেননি কালাম সিদ্দিকী আর রিজান হাসান। দায়িত্ব নেন এই দুই মিডলঅর্ডার ব্যাটার। চতুর্থ উইকেটে গড়েন ১১৭ রানের জুটি। হাফসেঞ্চুরি পেরিয়ে কালাম ফিরলে ভাঙ্গে সেই জুটি। ফেরার আগে তিনি খেলেন ৭৫ বলে ৬৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস।
কালাম ফিরলেও রিজান ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ‘নার্ভাস নাইনটিতে’ কাটা পড়েন তিনি। ফেরেন রান আউটের শিকার হয়ে। এর আগে ১০ চারে ৯৬ বলে খেলেন ৯৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস।
শেষদিকে কিছুটা ঝড়ো ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আর সামিউন বাসির রাতুল। ২৯ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন আবদুল্লাহ আর রাতুল ৮ বলে ১৩ রানে। এতে লড়াইয়ের বড় পুঁজি পায় বাংলাদেশ।