রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ম্যান সিটিকে ছিটকে দিয়ে আল-হিলালের ইতিহাস

ছোট দলের বড় চমক, ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো এবার রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপে। কেউ হয়ত কল্পনাও করেনি ম্যানচেস্টার সিটিকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিবে সৌদি ক্লাব আল-হিলাল। আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) সেই কল্পনাটাকেই বাস্তবে রূপ দিল তারা। টান-টান উত্তেজনার এই ম্যাচে, ৭ গোলের রুদ্ধশ্বাস এক লড়াই শেষে শেষে কোয়ার্টার নিশ্চিত করেছে আল হিলাল। অরল্যান্ডোর ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে এক রূপকথারই জন্ম দিয়েছে সৌদির ক্লাবটি।
আগের একপেশে ক্লাব বিশ্বকাপের জায়গায় এবার ৩২ দলের এই মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে একের পর এক চমকের জন্ম দিচ্ছে। অনেকেই মনে করেছিল পেপ গার্দিওলার অধীনে ম্যানসিটি এবার ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলছে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে অরল্যান্ডোতে আজ ম্যানসিটিকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে দিল আল-হিলাল।
গতকাল রাতে ইউরোপিয়ান রানার্সআপ ইতালিয়ান জায়ান্ট ইন্টার মিলানকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেন্স। আজ সকালে সিটিকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো আল-হিলাল। এর আগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে ড্র করেছিল আল-হিলাল। ফিফার কোন অফিসিয়াল টুর্নামেন্টে আল-হিলালই একমাত্র এশিয়ান ক্লাব যারা ইউরোপিয়ান কোন ক্লাবকে হারালো।
ম্যাচের প্রথমার্ধে ম্যান সিটি এগিয়েই ছিল সিটি। ইলকায় গুন্দোয়ানের সহায়তায় বার্নাদো সিলভা ৯ মিনিটেই সিটিকে এগিয়ে নেয়। এরপর প্রথমার্ধে আর গোল না হলেও দ্বিতীয়ার্ধে খেলাটা জমে উঠেছে। এরপর আল-হিলাল যা করেছে তা হয়তো অনেকের কল্পনার বাইরে।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই ৪৬ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান তারকা মার্কোস লিওনার্দোর গোলে ১-১ সমতায় ফিরে আল-হিলাল। এরপর ৫২তম মিনিটে জোয়াও ক্যানসেলোর সহায়তায় দলকে এগিয়ে নেন আরেক ব্রজিলিয়ান ম্যালকম। ৫৫তম মিনিটে সিটিকে সমতায় ফেরান হালান্ড।
ম্যাচের নির্ধারিত সময় ২-২ গোলে সমতা নিয়েই শেষ হয়। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেই অবিস্মরণীয় এক জয় তুলে নিয়েছে সৌদির ক্লাবটি।
অতিরিক্ত সময়ের প্রথম অংশে আবারও এগিয়ে যায় আল হিলাল। এবার ৯৪তম মিনিটে পর্তুগিজ তারকা রুবেন নাভাসের সহায়তায় বল জালে জড়ান ডিফেন্ডার কুলিবালি। ১০৪ মিনিটে ফিল ফোডেন গোল করে সিটিকে সমতায় ফেরান আরো একবার। ১০৫ মিনিট পর্যন্ত খেলা ৩-৩ গোলে ড্র।
অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় অংশের খেলায় ১১২তম মিনিটে রেনান লোদীর ক্রস থেকে হেড দেয় মিলানকোভিচ সাভিচ, কিন্তু তা ঠেকিয়ে দেয় সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এডারসন। ফিরতি বল পেয়ে যান লিওনার্দো, বুক দিয়ে তা কোনভাবে ঠেকিয়ে পড়ে যেতে যেতে কোনভাবে তা বাম পোস্টের একদম কাছে থেকে ডান পায়ে শট নিয়ে বল জালে জড়ান। আল-হিলাল এগিয়ে যায় ৪-৩ ব্যবধানে। প্রথম গোলের পর এবার দলের জয়সূচক গোল করে আল-হিলালের ইতহাস গড়ার কারিগর ২২ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান তারকা মার্কোস লিওনার্দো।
সিটির আক্রমণভাগের বিরুদ্ধে পুরো ম্যাচে পোস্টে দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন আল-হিলালের মরোক্কান গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনো। গ্রুপ পর্বে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ড্রয়ের পর শেষ ষোল-তে ম্যানচেস্টার সিটিকে থামিয়ে দিয়ে সিমিওনে ইনজাগি বুজিয়ে দিলেন তিনি কেন অন্যদের থেকে আলাদা।
আগামী শুক্রবার (৪ জুলাই) দিনগত রাত ১টায় কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের মুখোমুখি হবে আল-হিলাল।