আবারও বদলে যাচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপ, আসছে যেসব পরিবর্তন

ভিন্ন আঙ্গিকে অনুষ্ঠিত হয়েছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সবশেষ আসর। প্রথমবারের মতো ৩২টি দলকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসেছিল ক্লাব বিশ্বকাপের এই আসর। যেখানে বাঘা বাঘা দলগুলোকে পেছনে ফেলে শিরোপা জিতেছিল ইংলিশ ক্লাব চেলসি। তবে আগামী আসরে আরও বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ফিফা। সেটি অবশ্য বড় বড় ক্লাবগুলোর চাওয়াতেই হচ্ছে। সেই সঙ্গে কবে অনুষ্ঠিত হবে ক্লাব বিশ্বকাপের পরবর্তী আসর তারও একটি ধারণা পাওয়া গেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে ফিফার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের পরবর্তী আসর অনুষ্ঠিত হবে ২০২৯ সালের গ্রীষ্মকালে। সেই বিশ্বকাপে দল সংখ্যা বেড়ে হতে পারে ৪৮টি। ইতোমধ্যে মহাদেশীয় কনফেডারেশনগুলোকে এই কথা জানিয়ে দিয়েছে ফিফা। মূলত, শীর্ষ ক্লাবগুলোর চাওয়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে তারা। তবে দল সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
২০২৯ ক্লাব বিশ্বকাপের আয়োজক হবে কারা?
ক্লাব বিশ্বকাপের আগামী আসর আয়োজনে আগ্রহ দেখিয়েছিল ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার। তবে গ্রীষ্মে বিশ্বকাপ হলে সেটি কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, কাতার আয়োজন করতে চেয়েছিল শীতের সময়ে। মূলত, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এমনিতেই প্রচণ্ড গরম। তার উপর গ্রীষ্মের তাপমাত্রায় ইউরোপের ফুটবলারদের জন্য কাতারে ফুটবল খেলা অনেকটাই অসম্ভব। যে কারণে গ্রীষ্মে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন বাস্তবিক অর্থে অসম্ভব। সেটা হলে ক্লাব বিশ্বকাপ চলে যেতে পারে স্পেন কিংবা মরোক্কোতে। এই দুই দেশই ২০৩০ সালের বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক ।
ফিফা গ্রীষ্মে বিশ্বকাপ আয়োজনের চিন্তা করেছে মূলত ইউরোপিয়ান লিগগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে। কারণ, এই সময়ে ইউরোপিয়ান ফুটবলে মৌসুম শেষ হয়। কোনো লিগের ম্যাচ থাকে না। আবার নতুন মৌসুম শুরুর আগে বেশ খানিকা সময়ের ছুটিও পান খেলোয়াড়রা।
ক্লাব বিশ্বকাপের নতুন কাঠামো
যদি শেষ পর্যন্ত ৪৮ দল নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ আয়োজন করে ফিফা, তাহলে বদলে যেতে পারে বিশ্বকাপের কাঠামো। কেমন হতে পারে নতুন কাঠামো তারও একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে গার্ডিয়ানের সেই প্রতিবেদনে।
সবশেষ ক্লাব বিশ্বকাপে শেষ মুহূর্তে মেক্সিকান ক্লাব লিয়নকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর লস অ্যাঞ্জেলেস এফসি ও ক্লাব আমেরিকার মধ্যে এক ম্যাচের প্লে-অফ আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিজয়ী দল হিসেবে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিল লস অ্যাঞ্জেলেস।
সেই ম্যাচটিকে সফল বিবেচনা করে একটি বিকল্প কাঠামো নিয়ে চিন্তা করছে ফিফা। যেখানে মূল টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এক সপ্তাহ ধরে একক প্লে-অফ ম্যাচ আয়োজন করা হবে। এই প্লে-অফ থেকে বিজয়ীরা মূল আসরে জায়গা করে নেবে।
ফিফার কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই ধরনের ম্যাচ টুর্নামেন্টের আগেই উত্তেজনা সৃষ্টি করবে এবং টিভি স্বত্বের বাজারমূল্যও বাড়াবে।
এই পদ্ধতিকে আরও একটি কারণে বিবেচনা করা হচ্ছে। ৩২ দল নিয়ে হওয়া সবশেষ ক্লাব বিশ্বকাপে মোট ৬৪টি ম্যাচ হয়েছিল। ৪৮ দল নিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপ হলে সেই সংখ্যা দাঁড়াবে ১০৪টি ম্যাচে। এতে খেলোয়াড়দের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে। যে কারণে প্লে-অফ পদ্ধতিকে তুলনামূলকভাবে খেলোয়াড়বান্ধব বিকল্প হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
তবে চ্যালেঞ্জের মূখে পড়তে পারে ফিফার ক্লাব বিশ্বকাপে দল বাড়ানোর এই পরিকল্পনা। ফিফাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইতোমধ্যে একটি অভিযোগ দাখিল করেছে ইউরোপিয়ান লিগ ও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সংগঠন ফিফপ্রো। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে ইউরোপীয় কমিশন।