বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং বাংলাদেশের

গলে প্রথম দুই-তিন দিন সাধারণত ব্যাটাররাই আধিপত্য দেখান। কিন্তু আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) লঙ্কানদের বিপক্ষে শুরু হওয়া টেস্টে দেখা যায় তার বিপরীত চিত্র। দিনের প্রথম ঘণ্টাতেই ব্যাটিং ধসে বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ। অতটুকুই যা, এরপর আর লঙ্কানদের কোনো সুযোগই দেয়নি নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুশফিুকর রহিম। দুর্দান্ত, অনবদ্য ব্যাটিংয়ে প্রথম দিন নিজেদের করে নিয়েছেন। দুজনেই ছুঁয়েছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার।
গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দিন শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৯২ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ১৩৬ রানে অপরাজিত আছেন অধিনায়ক শান্ত আর ১০৫ রানে মুশফিকুর রহিম।
স্কোরবোর্ডে মাত্র তিন উইকেট রাখার কৃতিত্বও মুশফিক আর শান্তরই। দিনের প্রায় প্রথমে উইকেটে এসে ক্লান্তিহীনভাবে পার করে দিয়ে গেছেন পুরো দিনটা। হতাশায় কালো হওয়া মুখগুলোতে আবারও হাঁসি ফিরিয়ে এনেছেন তারা। চতুর্থ উইকেটে অনবদ্য আড়াইশ ছুঁইছুঁই রানের জুটি গড়েছেন এই দুজন। বাংলাদেশের উপর ছড়ি ঘুরানো লঙ্কানদের করেছেন শাসন।
বাংলাদেশের হাসিমাখা দিনে হেসেছেন শান্ত মুশফিক দুজনেই। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেছেন তারা। মুশফিক ছুঁয়েছেন ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি। গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পরে যে রান খরা পেয়ে বসেছিল তাকে, সেটি দুর করেছেন।
শান্তর সেঞ্চুরিটা হয়তো তার কাছে আরও স্পেশাল। প্রায় দুই বছর হলো হাসে না তার ব্যাট। শেষবার ২০২৩ সালের নভেম্বরে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন তিনি। মাঝের রান খরায় সমালোচনাও শুনতে হচ্ছিল তাকে। সেই সমালোচনাকে পেছনে ঠেলে আবারও হাসলো শান্তর ব্যাট।
এর আগে জল্পনা-কল্পনা শেষে এ ম্যাচেও ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামেন এনামুল হক বিজয় আর সাদমান ইসলাম। ১০ বলে কোনো রান না করেই ফিরে যান ওপেনার বিজয়। ভাঙে ৫ রানের ওপেনিং জুটি। ভালো শুরুর পরও উইকেট দিয়ে ফিরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। ফেরার আগে ১ চারে ৫৩ বলে ১৪ রান করেন তিনি। সাদমানকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেট তুলে নেন রত্নায়াক।
মুমিনুল হকও দুর্দান্ত শুরু করেন। কিন্তু সেই ইনিংসকে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ৪ চারে ৩৩ বলে করেন ২৯ রান। করে ফেরেন রাত্নায়াকের বলে ধনাঞ্জায়াকে ক্যাচ দিয়ে।
প্রথম ঘণ্টাতেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর দক্ষ নাবিকের মতো সেই বিপর্যয়কে সামাল দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুশফিকুর রহিম। দুজনে মিলে হাল ধরে বাংলাদেশের। প্রথম সেশন শেষ করে কাটিয়ে দেন বাকি দুই সেশনও।
অভিজ্ঞ এই দুই তারকা মিলে গড়েন ২৪৭ রানের অনবদ্য জুটি। শান্ত অপরাজিত আছেন ১৩৬ রান করে। তার ২৬০ বলের ইনিংসটি সাজানো এক ছক্কা আর ১৪ চারে। গলের নায়ক মুশফিক অপরাজিত আছেন ১০৫ রানে। ৫ চারে সাজানো তার ১৮৬ বলে ইনিংসটি।
এখন আগামীকাল দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। শান্ত আর মুশফিকের ওপর গুরু দায়িত্ব থাকবে সেটাকে সামাল দিয়ে ইনিংস বড় করার।