‘হে আল্লাহ্ ফারুককে ফিরিয়ে দিন’

চিত্রনাট্যকার ফারুক হোসেন কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত থেকে গতকাল নিখোঁজ হয়েছেন। আর এর পর থেকেই চলচ্চিত্র অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে চাপা উৎকণ্ঠা। সবার মনেই প্রশ্ন, ফিরে আসবে তো ফারুক?এরই মধ্যে নায়ক ও প্রযোজক আরশাদ আদনান কক্সবাজারে পৌঁছেছেন। পরিচালক হিমেল আশরাফও আছেন সমুদ্রপাড়ে উদ্ধার তৎপরতার সঙ্গে। জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ বারবার প্রার্থনা করছেন, অলৌকিকভাবে হলেও যেন ফিরে আসেন ফারুক।
হিমেল আশরাফ পরিচালিত ‘সুলতানা বিবিআনা’ ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ফারুক হাসান। পরিচালক আশরাফ ফারুক প্রসঙ্গে বলেন, ‘ফারুক এমন এক সময় কাজ করছিল, যখন তাকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের অনেক বেশি প্রয়োজন। এখন যেসব পরিচালক কাজ করছেন তাঁদের অনেকেই নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতেন ফারুককে নিয়ে। তার হাতে আটটি ছবির কাজ ছিল। যে ছবিগুলো করতে পারলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের অবস্থান বদলে যাবে। নিজের মন এখনো বলছে সে ফিরে আসবে। আর এই কারণে এখনো সমুদ্র পাড়ে হাঁটছি।’
ঈদের দিন থেকেই অগ্নি-২ ছবির প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ, গতকাল ফারুকের নিখোঁজ সংবাদ শোনার পর থেকে আর কোনো কাজে মন বসাতে পারছেন না তিনি। কিছুক্ষণ পর পরই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন তিনি। গতকাল বিকেলে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “আমরা এখন সারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে দোয়া চাচ্ছি। এখন শুধু দোয়া আর আল্লাহ্র দয়াতেই যদি ফারুককে ফিরে পাই।
অনেকদিন পর বাংলাদেশের চলচ্চিত্র একজন মেধাবী ও তরুণ কাহিনীকার এবং সংলাপ লেখক পেয়েছে। আমি আমার জীবনে এত ভালো কোনো কাহিনীকার পাই নাই। যে ১০০% মৌলিক ও অসাধারণ লিখে। তারই লেখা স্ক্রিপ্ট ‘ওয়ারিশ’ ও ‘পুলিশগিরি’, যা আমরা খুব শিগগিরিই শুরু করতাম। (সে)আরো লিখেছে সুলতানা বিবিয়ানা।
আর ‘আম্মাজান’ (for bollywood) ও ‘ছুটির ঘণ্টা’ রিমেকের জন্য সে লিখছিল। ফারুক দুই ঘণ্টা আগে কক্সবাজার সমুদ্রে গোসল করার সময় হারিয়ে যায়। ফারুক হারিয়ে গেলে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের অনেক অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। এই ক্ষতি কোনোদিন আমরা পোষাতে পারব কি না জানি না। তাই সারা দেশবাসীর কাছে ফারুকের ফিরে আসার জন্য দোয়া চাচ্ছি।”
ভিন্ন আরেকটি স্ট্যাটাসে আবদুল আজিজ বলেন, ‘হে আল্লাহ্ দয়া করেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র মাত্র ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, ফারুক হারিয়ে গেলে আমরা আবার কয়েক বছর পিছিয়ে যাব। হে আল্লাহ্ ফারুককে ফিরিয়ে দিন আমাদের মাঝে।’
ভার্সেটাইল মিডিয়ার কর্ণধার ও প্রযোজক আরশাদ আদনান ফারুকের নিখোঁজ সংবাদ শোনার পর গতকাল রাতের মধ্যেই পৌঁছে যান কক্সবাজার। তিনি বলেন, ‘ফারুকের জন্ম হয়েছিল চলচ্চিত্রের জন্যই। যখন সে কাজ শুরু করেছে তখনই এমন দুর্ঘটনা ঘটল। আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম তাকে নিয়ে। খবর শোনার পর মনে হচ্ছে বুকের ভেতর কী যেন নেই। গতরাতে এসে পৌঁছেছি কক্সবাজার। আছি দেখি তাকে নিয়ে ফিরতে পারি কি না।’