ক্রিকেট এখন রক্তে মিশে যাচ্ছে : শ্রাবণ্য

মাঠে লড়ছেন দুই দলের ক্রিকেটাররা। কোটি কোটি ক্রিকেট-ভক্তের মতো তাঁর দৃষ্টিও খেলার দিকে। তবে অন্যদের চেয়ে চোখ-কান তাঁর একটু বেশি খোলা রাখতে হয়। যেন একটা মুহূর্তও মিস হয়ে না যায়। কারণ, দিনের খেলা শেষেই শুরু হয়ে যাবে তাঁর কাজ। উপস্থাপনা করতে হবে ক্রিকেট নিয়ে। কথা হচ্ছে শ্রাবণ্য তৌহিদাকে নিয়ে। তিনি জিটিভির ক্রিকেটবিষয়ক অনুষ্ঠান ‘ক্রিকেট ম্যানিয়া’র উপস্থাপক। চলমান বাংলাদেশ-ভারত সিরিজেও উপস্থাপনা করছেন।
শ্রাবণ্যর অবশ্য এই একটাই পরিচয় নয়। তিনি পেশায় চিকিৎসক। তবে তাঁর নেশায় মডেলিং আর উপস্থাপনা। বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের এই কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত অনেক টেলিভিশন বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে। প্রথম প্রচেষ্টাতেই এফসিপিএসে চান্স পাওয়া শ্রাবণ্য পড়ছেন শেষ বর্ষে। লেখালেখিও করেন। চিকিৎসক, উপস্থাপক, মডেলের পাশাপাশি শ্রাবণ্যর আরেক পরিচয়—তিনি মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রবির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। তবে ‘ক্রিকেট ম্যানিয়া’য় উপস্থাপনার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি।
ক্রিকেট উপস্থাপনায় কেন? জানতে চাইলে শ্রাবণ্য বললেন, ‘ক্রিকেট আমার খুবই পছন্দের খেলা। খেলাটা বরাবরই আমাকে আকর্ষণ করত। উপস্থাপনা করতে করতে ক্রিকেট এখন রক্তে মিশে যাচ্ছে। প্রতিটি টুর্নামেন্ট শুরুর হওয়ার আগে অন্য রকম অনুভব করি।’
কখনো ক্রিকেট খেলেছেন? এমন প্রশ্নে শ্রাবণ্যর জবাব, ‘হ্যাঁ, ছোটবেলায় ক্রিকেট খেলেছি। মা বলতেন, আমি ছেলে হলেই ভালো হতো! মাঝেমধ্যে আমার নিজেরও এমনটা মনে হতো। তবে ক্রিকেট অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করাটা ছেলে হয়ে মাঠে ক্রিকেট না খেলার কষ্টটা কমিয়ে দিয়েছে।’
এর পর শ্রাবণ্য যোগ করেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে উপস্থাপনা একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। চেষ্টা করি ভালো কিছু করতে। ক্রিকেট ম্যানিয়াতেও আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
আরটিভি ও বৈশাখীর ফোনো লাইভ অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থাপনা করছেন শ্রাবণ্য। এসএটিভির ‘ওয়েডিং স্টোরি’রও উপস্থাপনা করছেন। এর আগে এনটিভির ‘মিউজিক ইউফোনি’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছেন। তবে অন্য সব উপস্থাপনার চেয়ে ক্রিকেট উপস্থাপনা যে আলাদা, তা উঠে এলো শ্রাবণ্যর কথায়, ‘কোনো টুর্নামেন্ট বা সিরিজ শুরুর আগেই বেশ প্রস্তুতি নিতে হয়। দলগুলো সম্পর্কে জানতে হয়, তাদের পরিসংখ্যানসহ সামগ্রিক ধারণা নিতে হয়। শত ব্যস্ততার মধ্যেও এসব নিয়ে পড়াশোনা, ঘাঁটাঘাঁটি করতে হয়। বাংলাদেশ-ভারত চলমান সিরিজের আগেও একইভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। সারাক্ষণ খেলা সম্পর্কে নিজেকে আপডেট রাখার চেষ্টা করছি।’
শ্রাবণ্য বললেন, ‘সেই ছোটবেলা থেকেই আমার মিডিয়ার প্রতি আগ্রহ। তবে ক্লাসে বরাবরই ফার্স্ট হওয়া, বাবার স্বপ্ন পূরণ করতেই নিজের স্বপ্নগুলো সুপ্ত ছিল। কিন্তু রক্তে মিশে থাকা শিল্প তো প্রকাশ পাবেই। এমবিবিএস শেষ হতেই শখের বশে মডেলিং শুরু করি। এর পর উপস্থাপনা। তার পর তো শুধুই এগিয়ে চলা। অনেক টিভিসি করলাম। বিলবোর্ড, পত্রিকা-ম্যাগাজিনের জন্য ফটোশুট তো আছেই। তবে উপস্থাপনাটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার জায়গা। নিজেকে, নিজের বুদ্ধিমত্তাকে ভালোভাবে প্রকাশ করা যায়। বিশেষ করে লাইভ শোগুলোতে এটার সুযোগ আরো বেশি।’