বলিউডের তরুণ প্রজন্মের নায়ক বরুন ধাওয়ান ও নায়িকা আলিয়া ভাটের একসঙ্গে অভিনীত তৃতীয় ছবি ‘বদ্রিনাথ কি দুলহানিয়া’ আগামী ১০ মার্চ মুক্তি পেতে যাচ্ছে। তাঁদের অফ-স্ক্রিন ও অন স্ক্রিন রসায়ন সবার থেকে একটু আলাদাই। অনেকে মনে করেন, আলিয়া ও বরুন বেশ ভালো জুটি। বাস্তব জীবনে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক থাকুক আর নাই থাকুক একে অন্যের সঙ্গে থাকতে যে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, সেটা ডিএনএ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার থেকেই বোঝা যায়। চলুন জেনে নিই ভালোবাসা দিবস ও ভালোবাসার মানুষ নিয়ে এই দুই তারকা কী ভাবেন।

প্রশ্ন : প্রথম দেখায় প্রেম- বিশ্বাস করেন?

আলিয়া : হ্যাঁ, পুরোপুরি।

বরুন : হ্যাঁ, আমিও।

প্রশ্ন : কীভাবে প্রেমের প্রস্তাব চান?

আলিয়া : ছবির শুটিং স্পটে। কারণ যদি সে আমাকে ভালোভাবে চেনে তাহলে জানবে কোনটা আমার প্রথম ভালোবাসা। তাই আমার দ্বিতীয় ভালোবাসা অবশ্যই একটি ছবির শুটিং স্পটেই আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দিবে, শুটিং স্পট হলো আমার প্রথম ভালোবাসা। যদিও এটা শুনতে খুব একটা রোমান্টিক মনে হচ্ছে না।

বরুন : আলিয়া আমার থেকে অনেক বেশি রোমান্টিক। আমি জানি, আমাকে রোমান্টিক মনে হয় কিন্তু আসলে আমি রোমান্টিক না। আমার মন খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়, এ কারণে আমি সপ্তাহের সাতদিনই রোমান্টিক হতে পারি না। 

আলিয়া : আমি খবুই রোমান্টিক। আমার কাছে ভালোবাসা হলো বোঝাপড়া এবং অন্তরঙ্গতা। যদি সে আমাকে সত্যি ভালোবাসে এবং আমাকে বোঝে, তাহলে সে অবশ্যই বুঝবে আমি কী চাই। এটা ছাপার পর সে অবশ্যই জানবে কীভাবে আমি প্রস্তাব চাই।(হাসি)

বরুন : আমি জানি না... ‘আই লাভ ইউ’ কথাটা এখন খবুই স্বস্তা ভাবে বলা হয়। আজকাল মানুষ ‘ভালোবাসা’ শব্দটি বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করছে। তাই ২০১৭ সালে এসে ‘ভালোবাসা’ জিনিসটিকে অনুভব করতে হবে। 

আলিয়া : আমি বিয়ের প্রস্তাবের কথা বলেছি, ভালোবাসার প্রস্তাব না।

বরুন : বিয়ে, আমি অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে প্রস্তাব দিব। আমি জানি না কিন্তু কিছু একটা করব।

আলিয়া : আমি জানি তুমি মোটেই আকর্ষণীয় কিছু করবে না। 

বরুন : এটা সত্যি। হাটু গেড়ে বসে প্রস্তাব দেওয়ার মতো?

আলিয়া : না। বিয়ের প্রস্তাবের ক্ষেত্রে একজন ছেলের হাঁটু গেড়ে বসাটা একটা অপরিহার্য অংশ।

বরুন : আমি সেই মেয়েটির জন্য বিশেষ কিছু করতে চাই। যা তার ইচ্ছে, যা কিছু তাকে খুশি করে। আমি তাই করব। এটা তাকে ঘিরেই হবে।

প্রশ্ন : ভ্যালেন্টাইনস ডে- ভালোবাসা উদযাপনের জন্য একটা বিশেষ দিন, এটা বিশ্বাস করেন?

আলিয়া : সত্যি বলছি, আমি মনে করি এটা অনেক বড় একটা চাপ!(হাসি) এটা শুধু একদিনের জন্য। কারণ কখনো কখনো আপনার জীবনে পুরুষ থাকে না, তাই…

বরুন : আমি খুবই পছন্দ করি! আমি ছুটির দিন পছন্দ করি। দুই থেকে তিনটি ভালো ভ্যালেন্টাইনস ডে আছে আমার।

আলিয়া : এত বছর পর, আমি একটা জিনিস শিখেছি। বুঝেছি এটাই ভালোবাসা দিবস এবং আমি এর জন্য সময় খুঁজে বের করব, কারণ, তাড়াহুড়া এবং ছোটাছুটির এই জীবনে সময় পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়।

বরুন : আপনি যখন স্কুল বা কলেজে পড়তেন তখন প্রতিদিনই ভালোবাসা উদযাপন করতে পারতেন এবং সেটা তখন কোনো ব্যাপারই না।

আলিয়া : কিন্তু বড় হয়ে বুঝেছি, ভালোবাসা দিবস বিশেষ একটা দিন। আমার প্রেমিক আমাকে বাইরে নিয়ে যাবে কি যাবে না, এটা এক ধরনের প্রতিযোগিতার মতো ছিল, কিন্তু এখন এটা শুধু একটা গুরুত্বপূর্ণ দিনে পরিণত হয়েছে, যেখানে একজন আরেকজনকে সময় দেওয়াটাই মুখ্য।

বরুন : অচেনা মেয়েদের কাছ থেকে উপহার পেতে আমার ভালোই লাগত, আমি জানতাম না কে ওগুলো পাঠাত।

আলিয়া : আমি কার্ড পেতে পছন্দ করতাম।

প্রশ্ন : কারো কাছ থেকে পাওয়া সবচেয়ে রোমান্টিক উপহার কী ছিল?

আলিয়া : আমি ঠিক মনে করতে পারছি না। উপহার হিসেবে আমি খুব বিশেষ কোনো কিছু ভালোবাসা দিবসে পাইনি। 

বরুন : আমি একটি সুন্দর হাতে লেখা চিঠি পেয়েছিলাম। আমি তোমাকে সেটা দিব আলিয়া। ভালোবাসা দিবসের একটি টি-শার্ট পেয়েছিলাম, যাতে লেখা ছিল- আমার ভ্যালেন্টাইন হও!

প্রশ্ন : সবচেয়ে রোমান্টিক কথা কী যা আপনি ভালোবাসেন?

আলিয়া : আমার কাছে খুবই রোমান্টিক মনে হয় যখন একজন মানুষ সত্যি আপনাকে ভালোবাসে এবং আপনাকে ভালোবাসার কথা বলে। সে এতটাই ভালোবাসে যে বিষয়টা নিয়ে সে নিজেও বিরক্ত। এরকম হওয়ার কারণ হলো- ভালোবাসা ছাড়া তার আর কিছু করার নেই, যেহেতু সে অনেক ভালোবাসি। আমার কাছে বিষয় দারুণ লাগে।

বরুন : সাধারণ বা ছোট বিষয় যা আমাকে স্পর্শ করবে। আমার খুবই ভালো লাগবে যদি, যে মানুষটি আমার সঙ্গে থাকবে সে নিজের ইচ্ছেয় আমার জন্য খাওয়ার কিছু অর্ডার দেয়। কারণ সে জানে আমি কী পছন্দ করি। এগুলো দেখেই মনে হবে সে আমার প্রতি কতটা যত্নশীল। সে জানে আমার কী প্রয়োজন এবং সে আমাকে না বলে কিছুই করবে না।

প্রশ্ন : এখন কী আপনি কাউকে ভালোবাসেন?

বরুন : আমি প্রেমে পড়েছি কি না? হ্যাঁ!

আলিয়া : হ্যাঁ।

প্রশ্ন : ভালোবাসা হলো....

বরুন : নিঃস্বার্থ।

আলিয়া : এর মানে ভিন্ন দিনে ভিন্ন বিষয়, আজকেও, আমি বলব এটা সুন্দর।

প্রশ্ন : কামনা...

বরুন : স্বার্থপরতা

আলিয়া : অত্যন্ত দামি।

প্রশ্ন : এক রাতের জন্য..

বরুন : ভালো, যদি আমি এতে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করি এবং মজার, যদি আপনি এটা করতে চান।

আলিয়া : কখনোই হবে না।

প্রশ্ন : আমার সত্যিকারের ভালোবাসা দিবস হলো...

আলিয়া : পিৎজা, বন্ধুরা, আরামদায়ক বিছানা এবং তরমুজের জুস।

বরুন : আলিয়া ইতিমধ্যেই আমার দুটি পছন্দের খাবারে অভ্যস্ত হয়ে গেছে- পিৎজা ও তরমুজের জুস কিন্তু বাচ্চাদের মতো আরো একটা জিনিস আমি করতে পছন্দ করি- জুহু বিচে হেঁটে বেড়ানো, আমি এটা করতে খুবই পছন্দ করি।

আলিয়া : ক্রিকেট খেলা। এটা মজার। বোলিং… এটাও খুব মজার।

বরুন : হ্যাঁ, এটাও।

প্রশ্ন : যখন প্রেম চলছে তখন কোনটা ভালো লাগে- লিভিং ইন না বিয়ে?

আলিয়া : একেকটা একেক রকম। আমি বিয়ের রীতি পছন্দ করি কিন্তু আমি লিভিং ইনেরও বিরোধিতা করি না।

বরুন : যখন ভালোবাসবেন শুধু ভালোবাসবেন। আপনি বিয়ে করেন কিংবা লিভিং ইন করেন কিংবা একজন আরেকজনের থেকে দূরে থাকেন। ভালোবাসাটাই এখানে মুখ্য, আর কিছু না।

প্রশ্ন : আপনার ভ্যালেন্টাইনের কাছ থেকে কোন উপহারটা চান?

আলিয়া : আমি মনে করি, এটা জড় কোনো বস্তু না। শুধু, বাকি জীবনটা আমার প্রতি তার শতভাগ মনোযোগ।

বরুন : শুধু তাকে… আর বাকিটুকু আমাকে। 

আলিয়া : উফফ! আমি কখনোই বলব না তুমি আনরোমান্টিক! এটা সত্যিই ভালো!

(সংক্ষেপিত)