‘ভালোবাসা উজাড় করেছি গানের প্রতি’

বাবার ইচ্ছে ছিল সঙ্গীতশিল্পী হওয়ার। সেটি আর হয়ে ওঠেনি। স্বপ্ন দেখেছেন ছেলেকে সঙ্গীতশিল্পী প্রতিষ্ঠা করবেন। ছেলে সঙ্গীতশিল্পী হয়েছেন ঠিকই, তবে মৃত্যুর কারণে সেটি দেখে যেতে পারেননি বাবা। রবীন্দ্রসঙ্গীতশিল্পী দীপাঞ্জন মুখার্জিই বলছিলেন বাবার স্বপ্নের কথা। সম্প্রতি তাঁর প্রথম একক রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম ‘ধ্রপদী খেয়াল’ বেরিয়েছে।
নির্ঝর চৌধুরীর সঙ্গীত পরিকল্পনায় অগ্নিবীণা প্রকাশনা থেকে প্রকাশিত এই অ্যালবামে রয়েছে আটটি গান। গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- আজ বুঝি আইলো প্রিয়তম, প্রচণ্ড গর্জনে আসিল এক দুর্দিন, ওই পোহাইল তিমির রাতি, বাহির পথে বিবাগী হিয়া, নবকুন্দধবলদল সুশীতল, আমারে করো জীবনদান ইত্যাদি। নতুন অ্যালবাম এবং আগামী দিনে গানের পরিকল্পনা নিয়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন দীপাঞ্জন মুখার্জি।
আপনার নতুন অ্যালবাম বের হলো। অনুভূতি কেমন?
‘ধ্রুপদী খেয়ালে’ আমার প্রথম অ্যালবাম। আমার প্রিয় গানগুলো নিয়ে এই অ্যালবামকে সাজিয়েছি। হৃদয়ের সব ভালোবাসা উজার করে দিয়েছি এই গানগুলোর প্রতি। সকলের দোয়া চাইছি, ভালোবাসা চাইছি, সহযোগিতা চাইছি।
অ্যালবামে গাওয়া কোন গানটি আপনাকে বেশি স্পর্শ করেছে?
‘ধ্রুপদী খেয়ালে’ আমার প্রথম একক অ্যালবাম। এই অ্যালবামের সবকটি গানই আমার খুব প্রিয়। কিন্তু বিশেষ করে বাহির পথে বিবাগী হিয়া আমার বেশি প্রিয়। কারণ, এই গানটিতে নিজের সঙ্গে প্রেম, নিজেকে ভালোবাসার ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়েছে।
সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগ কী ছোটবেলা থেকেই?
বাবার প্রচণ্ড ইচ্ছে ছিল সঙ্গীতশিল্পী হওয়ার। কিন্তু তা হয়ে ওঠা হয়নি। বাবার ঐকান্তিক ইচ্ছের ফলেই সঙ্গীত শিক্ষা নেওয়া এবং সঙ্গীতের প্রতি অনুরাগের জন্ম নেওয়া। রবীন্দ্রনাথকে জানার পর এই অনুরাগ পরে ভালোবাসায় রূপ নেয়।
সংগীতের হাতে খড়ি কাদের কাছ থেকে?
জীবনে অনেক গুণীজনদের কাছে সঙ্গীত শিক্ষার সুযোগ হয়েছে। হাতে খড়ি হয়েছে আমার গুরু প্রদীপ ঘোষের কাছে। পরবর্তীকালে মিতা হক, লাইসা আহমেদ লিসা, সনজীদা খাতুন, আজিজুর রহমান তুহিন প্রমুখ সঙ্গীত বিশারদের কাছে শিখেছি। প্রায় কুড়ি বছর ধরে আমি গানের সঙ্গে আছি। এ ছাড়া ছায়ানটে গান শিখেছি।
অ্যালবামে সাড়া পাচ্ছেন কেমন?
বেশ সাড়া পাচ্ছি। বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতে ইতিমধ্যে বেশ সাড়া পড়ে গেছে। তা ছাড়া বেশ ভালো রকমের বিক্রিও হচ্ছে।
রবীন্দ্র সঙ্গীত নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?
বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে রবীন্দ্র চিন্তা, রবীন্দ্র দর্শন পৌঁছে দিতে চাই। রবীন্দ্রনাথের গানের আলোয় যেন বাংলার প্রতিটি ঘর উদ্ভাসিত হয় সে ব্যাপারে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে চাই।
বাংলাদেশে রবীন্দ্র সঙ্গীতের বর্তমান প্রেক্ষাপট কেমন বলে মনে হয়?
বাংলাদেশে রবীন্দ্র সম্ভাবনা প্রবল। বাঙালির বাঙালিপনা রবীন্দ্র ভাবনায় মিশে যায়, বিশেষ করে এই দেশে। তা ছাড়া তরুণ প্রজন্ম সানন্দে রবীন্দ্রসঙ্গীতকে গ্রহণ করছে। রবীন্দ্র ভাবনায় মিশে যাচ্ছে। এই দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্র সঙ্গীত সংস্কৃতিতে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে।
গানের পাশাপাশি কী করছেন?
আমি পড়াশোনা করেছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে বেসিক ব্যাংকে অফিসার হিসেবে কর্মরত।