নরসিংদী শহরের সড়কগুলো যেন মরণফাঁদ, বিপর্যস্ত পৌরজীবন

নরসিংদী পৌর শহরে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষের বসবাস। এই শহরের প্রায় সব সড়কেরই এখন বেহাল দশা। শহরের প্রবেশমুখ থেকে শুরু করে প্রধান সড়কগুলোয় খানাখন্দ আর জলাবদ্ধতায় পরিণত হয়ে মরণফাঁদ। যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সবচেয়ে ঝুঁকিতে ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রীসহ পথচারীরা। চারদিকে খানাখন্দ, এ যেন গাড়ি চলাচলের রাস্তা নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত কোনো এলাকা।
পৌর শহরের খাটেহারা এলাকার চিত্র খুবই নাজুক। চারদিকে গর্ত, পানি আর ধুলাবালিতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নরসিংদী শিল্পসমৃদ্ধ শহর হলেও যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন আতঙ্কের নাম। পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ভুক্তভোগীদের ক্ষোভ বাড়ছে।
জানা যায়, ১৯৭২ সালে নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই নরসিংদী পৌরসভা। ১৯৯৬ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পেলেও বাস্তবে তার চিত্র ফুটে ওঠেনি শহরের রাস্তাঘাটে। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার ভেতরের রাস্তাগুলোও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা এসব রাস্তায় প্রতিদিন অটোরিকশা উল্টে গিয়ে যাত্রী আহত হচ্ছে। দুর্ঘটনা আর যানজটে অতিষ্ঠ পৌরবাসী রাস্তায় নামলেই আতঙ্ক কাজ করে।
শহরের শাহেপ্রতাব থেকে খাটেহারা, হেমেন্দ্র সাহার মোড়, বাজির মোড় হয়ে স্টেশন রোড, শাপলা চত্বর মডেল থানা রোড, মালাকার মোড় থেকে ডিসি রোড, ঘোড়াদিয়া, চিনিশপুর, বৌয়াপুর, বাইপাস বেরিবাঁধ, বাসাইল ও রেজিস্ট্রি অফিস রোডের সবকটির অবস্থাই নাজুক। সড়কগুলো এখন যেন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।

যানবাহনচালকরা জানায়, খানাখন্দ আর পানিতে ভরা রাস্তায় যানবাহন চালানো এখন দুঃসাহসেরই নাম।
পথচারী ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার অবহিত করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নেয় না।
পৌর শহরের বাসিন্দা দীপায়ন দাস বলেন, শহরে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। বাড়ি থেকে বের হলেই সড়কে চলাচলের উপয় নেই। জলাবদ্ধতা, ভাঙা আর খানাখন্দ। সড়কের এই অবস্থা হলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

আরেক বাসিন্দা সাজু ভুইয়া বলেন, শহরের সব রাস্তাঘাট খারাপ হয়ে গেছে। সবচেয়ে বিপদে আছে সাধারণ মানুষ। যারা প্রতিনিয়ত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দিয়ে চলাচল করে। এসব অটোরিকশা খানাখন্দ দিয়ে চলাচলের সময় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ আহত হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সড়ক সংস্কার না করলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে যাবে।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম বলেন, সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী করতে শিগগিরই মোবাইল মেইনটেন্যান্স কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে।
পৌর প্রশাসক মনোয়ার হোসেন জানান, বিগত সময়ে যেভাবে সড়ক উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল, সেভাবে হয়নি। বর্তমানে বাজেট বরাদ্দ না থাকায় নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা যাচ্ছে না। তবে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়ে দ্রুত নতুন প্রকল্প নেওয়ার চেষ্টা চলছে।