‘আমি কাজে গেলাম, বাচ্চা দুইটারে দেখিস’

মেরাদিয়া বস্তিতে লাইলি বেগমের ছোট ঘর। সেখানে আজ শনিবার গিয়ে দেখা মিলল তাঁর ননদ জাহানারা বেগমের। জাহানারা একটানা কাঁদছিলেন। গতকাল শুক্রবার ঠিক সকাল ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন লাইলি। জাহানারাকে বলেছিলেন, ‘আপা আমি কাজে গেলাম, বাচ্চা দুইটারে দেখিস।’
নিজ ঘরে এটাই ছিল লাইলি বেগমের (২৫) শেষ কথা। রাজধানীর বনশ্রীতে এক বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন লাইলি। গতকাল শুক্রবার ওই বাসায় তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। বাসার গৃহকর্তা মঈন উদ্দিন দাবি করেন, কাজ করতে এসে আত্মহত্যা করেন লাইলি।
লাইলির দুই শিশু। একজনের নাম আতিকুর (৩) অন্যজনের নাম মরিয়ম (৫)। লাইলির স্বামী নজরুল ইসলাম বর্তমানে ভারতের একটি কারাগারে বন্দি।
জাহানারা বেগম এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল ভোর ৫টার দিকে লাইলি ঘুম থেকে ওঠেন। এরপর তাঁর দুই সন্তানের জামাকাপড় ধুয়ে দেন। জাহানারাকে সকালে রান্নার কাজে সাহায্য করেন লাইলি। সব কিছু শেষ করে লাইলি বলেন, ‘আপা আজ আমার বেতন পাওয়ার কথা আছে। মালিকে বলেছে আজ ১২টার দিকে আমার বেতনের টাকা দিয়ে দেবে।’ এ জন্য সকাল ৭টার দিকে বাসা থেকে কাজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন লাইলি।
এসব বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জাহানারা। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আমি ক্যামনে জানুম যে ওই (লাইলি) আজ মারা যাইব। বাচ্চাগুলার সব কাপড় আজ ধুয়ে দিছে, যাওনের সময় কয় আপা বাচ্চা দুইটারে একটু দেখিস।’
লাইলির স্বামী নজরুল ইসলামের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম গতকাল রাতেই খিলগাঁও থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এরই মধ্যে গৃহকর্তা মঈনউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী শাহনাজ বেগম ও দারোয়ান তোফাজ্জল হোসেন টিটুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।