‘সবাই জানতে পারসে, আইজ কাজে যামু না’

‘কাজে যান নাই?’
‘না।’
‘বাসার লোকজন আপনার খোঁজ করে নাই?’
‘তাঁরা সবাই জানতে পারসে, আমরা আইজ কাজে যামু না।’
আলেকজান বেগম গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন রাজধানীর বনশ্রীর এক বাসায়। থাকেন মেরাদিয়া বস্তিতে। মৃত লাইলির প্রতিবেশী তিনি। আলেকজানের অভিযোগ, গৃহকর্মী লাইলিকে হত্যা করা হয়েছে। আর এ জন্য ওই বাসার গৃহকর্তা মঈনউদ্দিনের শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
‘লাইলি হত্যা’র প্রতিবাদে ও মঈনউদ্দিনের বিচারের দাবিতে আজ শনিবার আলেকজান কাজে যাননি। শুধু আলেকজান নয়, মেরাদিয়া বস্তির শতাধিক নারী গৃহকর্মী আজ কোনো বাসায় কাজ করতে যাননি।
ওই বস্তির শতাধিক নারী বনশ্রী এলাকার বিভিন্ন বাসায় কাজ করে জীবিকা অর্জন করেন। কেউ একটি বাসায়, কেউ একাধিক বাসায় কাজ করেন।
গতকাল শুক্রবার মঈনউদ্দিনের বাসায় গৃহকর্মী লাইলি বেগমকে (২৫) মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মঈনউদ্দিন দাবি করেন, তাঁর বাসায় কাজ করতে এসে আত্মহত্যা করেন লাইলি।
খবরটি ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সবাই মঈনউদ্দিনের বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে ঘটনার বিচার দাবি করেন। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।
গতকালই সন্ধ্যার দিকে একাধিক গৃহকর্মী জানান, ‘লাইলিকে হত্যা’র প্রতিবাদে এবং মঈনউদ্দিনের বিচারের দাবিতে তাঁরা আজ শনিবার কাজে যাবেন না।
মর্জিনা, জাহেরা বেগম ও সুলতানা বনশ্রীর বিভিন্ন বাসায় কাজ করেন। তাঁরা জানান, এটা কোনোভাবেই আত্মহত্যা হতে পারে না। লাইলিকে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা ওই বাসার গৃহকর্তা মঈনউদ্দিনের বিচার দাবি করেন।
পেয়ারা বেগম নামের এক গৃহকর্মী জানান, তিনি কাজে যাননি আজ। তাঁর পরিচিত অন্য নারীরাও আজ কাজে যাননি। সকাল থেকেই ওই বস্তিতেই আছেন তাঁরা।
এ সময় রিতা বেগম নামে এক গৃহকর্ত্রী জানান, তিনি ও তাঁর পরিচিত কেউ আজ কাজে যাননি। আলেকজান বেগম জানান, তিনি একাধিক বাসায় কাজ করেন। কিন্তু আজ কোনো বাসায় যাননি।