বিনা উসকানিতে ময়মনসিংহে ছাত্রদলের সমাবেশ পণ্ড করার জন্য প্রশাসনকে দায়ী এবং নতুন করে গ্রেপ্তার, হয়রানি, নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়েছে জেলা বিএনপির নেতারা। আজ শুক্রবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।

এ সময় এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জেলা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে চরাঞ্চলে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকীর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে বিনা উসকানিতে পুলিশ  জোর করে সভা বন্ধ করতে গিয়ে নির্বিচারে লাঠিচার্জ, পরে আকস্মিকভাবে গুলি করে।  এ সময় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং ময়মনসিংহ মহানগর উত্তর দক্ষিণ জেলা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রায় ১০০ নেতাকর্মী আহত হন। এর মধ্যে ১০ জনের মাথা ফেটে যায়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে আটজনকে। এখনও প্রায় ২৮ জন নেতাকর্মীর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনাস্থল থেকে ২২টি মোটরসাইকেল পুলিশ নিয়ে গেছে।’

এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, ‘গতকালের এই নিষ্ঠুর ও নির্মম হামলার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। বর্তমান সরকার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে নিজেদের অনৈতিক শাসন দীর্ঘস্থায়ী করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথেচ্ছ ব্যবহার করে দেশে কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করেছে। যার ফলে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করার বা কর্মসূচি পালন করার কোনো অধিকার কারও নেই।’

এর প্রতিবাদে ঢাকার প্রতিবাদ মিছিল থেকেও গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানান বিএনপির এ নেতা।

এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, ‘হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি, হামলার পর মিথ্যা মামলা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে। গত মার্চ মাসেও বিএনপির একটি প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলা করে ১০ নেতাকর্মীকে আটক করে এবং মিথ্যা মামলা নিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হয়রানি করেছে। গতকালকে ময়মনসিংহে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশে প্রতিবাদ হয়েছে।’

প্রিন্স ময়মনসিংহের এই সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেন,  ‘আমরা আপনাদের মাধ্যমে সরকার ও প্রশাসনকে হামলা-মামলা, দমন-নিপীড়ন বন্ধ করে রাজনীতির স্বাভাবিক বিকাশে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, রাজনীতির পথ বন্ধ হয়ে গেলে দেশ, জাতি, জনগণ কারও জন্য সুফল বয়ে আনবে না। আমরা গতকালের এই ঘটনাকে পুঁজি করে নতুন করে গ্রেপ্তার হয়রানি, নির্যাতন ও নিপীড়ন বন্ধ করারও আহ্বান জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলু, আলমগীর মাহমুদ আলম, নগর বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আমজাদ আলী, এ কে এম মাহবুবুল আলম, শামিম আজাদ, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, আহমেদ তাইয়েবুর রহমান হীরন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।