অন্তর্বর্তী সরকার কি এনসিপির সরকার, প্রশ্ন মির্জা আব্বাসের

অন্তর্বর্তী সরকার কি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সরকার কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীতে এক সমাবেশে এনসিপির নেতৃত্বে সরকারের সব সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি এই প্রশ্ন তোলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে এই সমাবেশ হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, কী বলব? এই সরকারের মাথা থেকে নিচ পর্যন্ত পচে গিয়েছে। আমি ধারণা করছি এই সরকার বোধহয় এনসিপির সরকার। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এই সরকার বোধহয় এনসিপির সরকার। কী মনে হয় আপনাদের? উনারা যখন-যেখানে যান প্রটোকল পান। সরকারি প্রটোকল। পুলিশ, বিডিআর, আর্মির গার্ড থাকে, সার্কিট হাউস ব্যবহার করেন, সরকারি যান পান। এমনভাবে বিষয়টা জানানো হয় যে, অমুক নেতা আসছেন দেখে রাখবেন।
প্রশ্ন রেখে মির্জা আব্বাস বলেন, ভাই আমরা তো বহু জায়গায় যাই, বহু গেলাম, কই আমরা তো পাই না? আমরা তো মন্ত্রী ছিলাম বহুদিন, ঢাকা মেয়র ছিলাম। কই আমরা তো পাই না সরকারি প্রটোকল।
মির্জা আব্বাস বলেন, ১০ মাসে তারা একজন হত্যাকারীরও বিচার করতে পারেনি। এই সরকারের বয়স ১০ বা ১১ মাসের বেশি হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত স্বৈরাচারের দোসরদের একজনেরও বিচার করতে পারে নাই। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে নাই, বহু লোক দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলো। আপনারা বিচার করছেন না। তিনি বলেন, আমি বলি, ১১ মাস কি কম সময়? এটা বেশি সময় না কিন্তু কম সময়ও না। ১০ মাসে একজন গর্ভবতী মা শিশুর জন্ম দেন। আপনারা একটি নতুন বন্দোবস্তের জন্ম দিতে পারলেন না...। অবশ্যই শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আজকে কি পেরেছি আমরা? অনেকে আমরা টাকার কুমির হয়েছি, যাদের ঘরে একসময় খাওয়া ছিল না তারা কিছু খাওয়া পাচ্ছি। আপনারা মনে রাখবেন এই অন্যায়ের বিনিময়ে যা অর্জন করছেন, যারা ভক্ষণ করছেন, পান করছেন, শহীদদের রক্ত পান করছেন আপনারা। এই কথা মাথায় রাখতে হবে।
মির্জা আব্বাস, আমরা ১৭ বছর মাঠে ছিলাম। অনেকে বলে, ১৭ বছর কোথায় ছিলাম। আরে ভাই ১৭ বছর কোথায় ছিলাম এখানে আমি যদি কাউকে জিজ্ঞাসা করি সে বলবে, ১৭ বছর জেলে ছিলাম, এত বছর আন্দোলন করেছি, এতো রাস্তায় কাটিয়েছি...একদিনে ওই শেখ হাসিনার পতন হয় নাই।
নির্বাচন নিয়ে গড়িমসি চলছে অভিযোগ করে মির্জা আব্বাস বলেন, আমি নির্বাচন নিয়ে একটি কথা বলতে চাই। এই আন্দোলনের ফসল। নির্বাচনের কথা আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি। তখন থেকেই আপনারা বলছেন, নির্বাচন করা যাবে না। আরে ভাই নির্বাচন করা ছাড়া দেশ চালাবে কীভাবে? তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে এতো গড়িমসি কেন... আমি বুঝতে পারি না। আমি একটা জিনিস বুঝতে পারি, জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড। অর্থাৎ বিচারক যদি দেরি করে বুঝতে হবে বিচারক রায় ভালো দেবে না। এটা আমরা বুঝতে পারি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায়, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, বিশেষ সহকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, মীর আলী নেওয়াজ, ইশরাক হোসেন, দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা বক্তব্য দেন।