ট্রাম্পের গাজা শান্তি প্রস্তাবে হামাসের আংশিক সম্মতি, আরও আলোচনার ইঙ্গিত

গাজায় চলমান যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার কিছু অংশে সম্মতি জানিয়েছে হামাস। তবে সংগঠনটি বলেছে, কয়েকটি বিষয়ে আরও আলোচনা প্রয়োজন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ অক্টােবর) হামাস তাদের আনুষ্ঠানিক জবাব ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েলের হাতে আটক ৪৮ জন ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে সব ইসরায়েলি বন্দি মুক্তি, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠন এবং হামাসের নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
হামাস তাদের জবাবে জানিয়েছে, তারা সব বন্দি— জীবিত ও মৃতদেহসহ— প্রস্তাবিত বিনিময় সূত্রে মুক্তি দিতে রাজি। এছাড়া তারা গাজা প্রশাসন ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাটদের একটি কমিটির হাতে তুলে দিতে সম্মত, তবে এটি আন্তর্জাতিকভাবে চাপানো “বোর্ড অব পিস”-এর পরিবর্তে ফিলিস্তিনিদের জাতীয় ঐকমত্যে গঠিত হওয়া উচিত বলে মত দিয়েছে।
তারা আরও বলেছে, গাজার ভবিষ্যৎ ও ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক আইন ও প্রাসঙ্গিক প্রস্তাব অনুসারে সর্বসম্মত জাতীয় অবস্থান থেকে নির্ধারিত হতে হবে।
এদিকে, ট্রাম্প হামাসের জবাবকে “ইতিবাচক” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, হামাস “দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত” এবং তিনি ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আল জাজিরার বিশ্লেষকরা বলছেন, হামাসের অবস্থান আলোচনার নতুন জানালা খুলে দিয়েছে। কাতার ও মিশর ইতোমধ্যে মধ্যস্থতার উদ্যোগ শুরু করেছে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিলে তারা প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও হামাসের অবস্থানকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করে সব পক্ষকে এই সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা মুসা আবু মারজুক স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তারা “বোর্ড অব পিস” ধারণা মেনে নেবে না। তার ভাষায়, “ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো অ-ফিলিস্তিনি সংস্থাকে আমরা কখনোই মেনে নেব না।”
এমন প্রেক্ষাপটে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, তারা দূরনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক যান ব্যবহার করে গাজা সিটির বহু এলাকা ধ্বংস করছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৬ হাজার ২০০ জনের বেশি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।