‘সুমুদ ফ্লোটিলা’য় কে এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী

গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে এবং অবরোধের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে গ্লোবাল ফ্লোটিলার সঙ্গে যাত্রা করেছেন ব্রিটেনের নিউক্যাসলের মানবতাবাদী কর্মী রুহি লরেন আখতার। রুহি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং নর্থম্বারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন।
১৮ সেপ্টেম্বর গ্লোবাল সামুদ ফ্লোটিলায় যোগ দেন তিনি। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবতাবাদী কর্মী ও আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়েছেন, যাদের লক্ষ্য গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট তুলে ধরা। খবর এশিয়ান স্ট্যান্ডার্ড ও গার্ডিয়ানের।
এদিকে, গাজামুখী আগের ফ্লোটিলাগুলো ইসরায়েলের বাধার মুখে পড়ার পর রুহি আখতার জানিয়েছেন, তাদের নৌযানটি শেষ পর্যন্ত সাইপ্রাসে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কারণ, নৌকায় থাকা কয়েকজন অংশগ্রহণকারী “উচ্চ ঝুঁকিতে” ছিলেন এবং দলটি চায়নি তারা আটক হোক। খবর গার্ডিয়ানের।

নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় আখতার বলেন, “মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং করিডর খুলে দেওয়ার পরিবর্তে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী আটকে দিয়েছে। আমরা আমাদের শত শত সহকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছি এবং ধারণা করছি তারা আটক অবস্থায় আছেন।”
তিনি আরও জানান, এখনও কিছু নৌযান গাজামুখী রয়েছে। একটি নৌযান সম্ভবত গাজার খুব কাছাকাছি আছে। ঠিক কী ঘটছে তা আমরা জানি না, তবে এখনও কিছু নৌযান চলছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড বানানাস–এর প্রতিষ্ঠাতা আখতার প্রায় এক মাস ধরে ফ্লোটিলার সঙ্গে আছেন।
রুহি আখতার ২০১৫ সালে এনএইচএস-এ লোয়ার-লিম্ব স্পেশালিস্ট হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেন। তিন বছর বয়সী সিরীয় শিশু আয়লান কুরদির সমুদ্রপথে মৃত্যুর মর্মান্তিক ছবি তার জীবন বদলে দেয়। সেখান থেকেই শুরু হয় শরণার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর যাত্রা।
তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন রিফিউজি বিরিয়ানি অ্যান্ড বানানাস বিগত এক দশকে গ্রীস, লেবানন ও গাজায় হাজারো শরণার্থী পরিবারকে খাদ্য, পোশাক ও জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে। সংগঠনটি নারীনেতৃত্বাধীন ও কমিউনিটি-ভিত্তিক, যেখানে অনেক স্বেচ্ছাসেবক নিজেরাও বাস্তুচ্যুত।
রুহির চাচা নিউক্যাসলের সাবেক লর্ড মেয়র ও স্বতন্ত্র কাউন্সিলর হাবিব রহমান বলেন, “আমার ভাতিজিকে নিয়ে আমি গর্বিত। তার সাহসিকতা মানবতা ও ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন। যদিও তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে, তবে আমরা তার পাশে আছি। বিশ্বনেতাদের এখনই এগিয়ে আসা উচিত।”
ফ্লোটিলায় যোগ দেওয়ার আগে রুহি বলেন, “অন্যায়ের মুখে নীরব থাকা কোনো বিকল্প নয়। বহুদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের খাদ্য, পানি, ভূমি, নিরাপত্তা ও চলাফেরার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই যাত্রা নীরব প্রতিবাদ নয়, এটি সংহতির ঘোষণা—একটি স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে বিশ্ব তাকিয়ে আছে।”