দাবানলে স্পেনে আরও একজনের মৃত্যু, কিছুটা নিয়ন্ত্রণে গ্রিসের পরিস্থিতি

দক্ষিণ ইউরোপে চলমান তীব্র দাবানলে স্পেনে এ সপ্তাহে তৃতীয় মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, গ্রিসের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) স্পেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কাস্তিয়া ও লিয়ন অঞ্চলে আগুন নেভানোর সময় মারাত্মক দগ্ধ হওয়া ৩৭ বছর বয়সী এক স্বেচ্ছাসেবী দমকলকর্মীর মৃত্যু হয়। এর আগে এ সপ্তাহে মাদ্রিদ, কাস্তিয়া ও লিয়ন অঞ্চলে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছিল।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ সামাজিক মাধ্যমে শোক প্রকাশ করে বলেন, “দাবানলের পরিস্থিতি এখনও গুরুতর, অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া জরুরি। যারা দিনরাত পরিশ্রম করে আগুন নেভাচ্ছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।”
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ ইউরোপে দাবানল আরও দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র হচ্ছে। এ বছর স্পেনে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৭ হাজার হেক্টরের বেশি বনভূমি পুড়ে গেছে — যা ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় তিনগুণ বেশি।
শুধু কাস্তিয়া ও লিয়ন অঞ্চলে এই সপ্তাহেই কয়েক হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীরা চারজনকে বনাঞ্চলে আগুন লাগানোর সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে।
ফ্রান্স স্পেনকে সাহায্য করতে দুটি পানি ছেটানো বিমান পাঠিয়েছে। স্পেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছেও বিমান সহায়তা চেয়েছে।
এদিকে, গ্রিসে পশ্চিমাঞ্চলীয় বন্দরনগরী পাত্রাসের পূর্বপ্রান্তে আগুন এখনও জ্বলছে, তবে বাতাস কমে আসায় দমকল বাহিনী কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। অন্তত ১৫ জন দমকলকর্মী দগ্ধ হয়ে, ধোঁয়ায় শ্বাস নেওয়া বা ক্লান্তির কারণে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ইউরোপের কোপার্নিকাস স্যাটেলাইট পর্যবেক্ষণ কর্মসূচির তথ্য অনুযায়ী, পাত্রাসসহ গ্রিসের বিভিন্ন স্থানের আগুনে ইতোমধ্যেই ১০ হাজার হেক্টরের বেশি বনভূমি পুড়ে গেছে।
পর্তুগালে প্রায় ১ হাজার ৯০০ দমকলকর্মী চারটি বড় দাবানল মোকাবিলায় নিয়োজিত আছেন। কেন্দ্রীয় ত্রাঙ্কোসো অঞ্চলের একটি আগুনে শনিবার থেকে ১৪ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে।
আলবেনিয়ায় দাবানলে এক ৮০ বছর বয়সী ব্যক্তি মারা গেছেন। তুরস্কেও জুনের শেষ থেকে ভয়াবহ দাবানল চলছে, যাতে এ পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
ইইউর সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সি জানিয়েছে, এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত দাবানল মোকাবিলায় তারা ১৬ বার সহায়তা দিয়েছে, যা ২০২৪ সালের পুরো মৌসুমের সমান।