গাজা যুদ্ধে ৮৯৮ ইসরায়েলি সৈন্য নিহত, ৫০ জনের আত্মহত্যা

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৮৯৮ জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত ও প্রায় ৫০ জন আত্মহত্যা করেছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম হারেৎজ বুধবার (৩০ জুলাই) এই তথ্য জানিয়েছে। এই প্রতিবেদন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মধ্যে গভীর মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে।
হারেৎজ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বছর (২০২৫) ১৭ জন সৈন্য আত্মহত্যা করেছেন, যেখানে ২০২৪ সালে ২৪ জন ও ২০২৩ সালে ১৭ জন আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে সাতজন গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আত্মহত্যা করেন।
সংবাদমাধ্যমটি আত্মহত্যার কারণ হিসেবে সামরিক মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদার, যেমন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী ও সমাজকর্মীদের তীব্র অভাবকে চিহ্নিত করেছে।
প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর অব্যাহতিপ্রাপ্ত সৈন্য, রিজার্ভিস্ট ও যুদ্ধাহত ইউনিটে কর্মরত কর্মীদের সহায়তা করার ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে– বিশেষ করে যারা নিহত সৈন্যদের দেহাবশেষ শনাক্ত করার মতো কঠিন কাজে জড়িত ছিলেন, তাদের ক্ষেত্রে এই ব্যর্থতা বেশি প্রকট।
সংবাদপত্র অনুসারে, প্রতি মাসে শত শত মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত সৈন্য সেনাবাহিনীর পুনর্বাসন বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন, যাদের অনেকেই গাজায় যুদ্ধ অভিযানের পরে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারে ভুগছেন।
সোমবার (২৮ জুলাই) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় ওফাকিম শহরে নিজ বাড়িতে একজন রিজার্ভ সৈন্যের মৃতদেহ পাওয়া গেছে, যা কর্মকর্তারা আত্মহত্যা বলে বর্ণনা করেছেন। এই সৈন্য নিহত সৈন্যদের দেহাবশেষ শনাক্ত করার জন্য দায়ী একটি ইউনিটে কাজ করেছিলেন।
সামরিক তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৮৯৮ জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত ও ছয় হাজার ১৩৪ জন আহত হয়েছেন। তবে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণভাবে আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি গোপন করার অভিযোগ রয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় নৃশংস আক্রমণ চালিয়েছে, যার ফলে ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই অবিরাম বোমাবর্ষণ গাজাকে ধ্বংস করে দিয়েছে ও তীব্র খাদ্য সংকটের সৃষ্টি করেছে।
সোমবার ইসরায়েলি অধিকার গোষ্ঠী বিতসেলেম ও ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস-ইসরায়েল ফিলিস্তিনি সমাজের পদ্ধতিগত ধ্বংস এবং অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ইচ্ছাকৃতভাবে ভেঙে ফেলার কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলকে গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগ করেছে।