সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুইদা শহরে বেদুইন সুন্নি গোষ্ঠী ও দ্রুজ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংঘর্ষে ৩০ জনের মৃত্যুর কথা জানালেও ব্রিটেনভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ৩৭ জন। খবর বিবিসির।
সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সহিংসতা থামাতে সরকারি বাহিনী সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে। একই সঙ্গে অঞ্চলটিতে উত্তেজনা কমাতে সৈন্য পাঠানো হয়েছে।
সুইদা প্রদেশের গভর্নর মুস্তাফা আল-বাকুর জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন “আত্মসংযম প্রদর্শন করে ও জাতীয় সংস্কার কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানায়”।
গত ডিসেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের পর থেকেই সিরিয়ার বিভিন্ন সংখ্যালঘু ও গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামপন্থী বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) রাজধানী দামেস্ক দখল করে সরকার উৎখাত করে। আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।
বর্তমানে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীদের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার দেশব্যাপী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে, তবে পরিস্থিতি এখনও অত্যন্ত ভঙ্গুর।
সুইদার সহিংসতা মূলত সুন্নি বেদুইন ও দ্রুজ সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ থেকে শুরু হয়। দ্রুজ ধর্ম একটি শিয়া ইসলাম ভিত্তিক উপশাখা, যারা সিরিয়া ছাড়াও লেবানন, জর্দান ও ইসরায়েলে বসবাস করে।
আসাদের শাসনামলে, নিরাপত্তার আশায় অনেক দ্রুজ শাসকের প্রতি নীরব আনুগত্য দেখিয়েছিল । তবে নতুন সরকারের আমলে তাদের নিরাপত্তা ও প্রতিনিধিত্ব নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
গত এপ্রিল ও মে মাসেও নতুন নিরাপত্তা বাহিনী ও দ্রুজ যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষে ডজনখানেক মানুষ নিহত হয়।

শুধু দ্রুজ নয়, গত কয়েক মাসে আলাওয়াইট সম্প্রদায়, যারা শিয়া ইসলামের আরেকটি শাখা, তাদের সদস্যদের ওপরও বহু হামলা হয়েছে। এমনকি দামেস্কের একটি গির্জায় প্রার্থনার সময় হামলা চালানো হয়।
এমন অস্থিরতার মধ্যেই পশ্চিমা দেশগুলো সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এইচটিএস-কে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে, আর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সিরিয়ায় সফর করেছেন—যা গত ১৪ বছরে প্রথম কোনও ব্রিটিশ মন্ত্রীর সিরিয়া সফর।