ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ২

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে শনিবার (১২ জুলাই) বড় ধরনের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এটি চলতি জুলাই মাসে চতুর্থ বড় ধরনের আক্রমণ। এ হামলায় চেরনিভৎসি শহরে কমপক্ষে দুইজন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছেন। খবর রয়টার্সের।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া এক দিনে ৫৯৭টি ড্রোন এবং ২৬টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বেসামরিক অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা ২৫টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৩১৯টি শাহেদ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে এবং আরও ২৫৮টি ড্রোন ইলেকট্রনিক যুদ্ধের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করেছে।
জেলেনস্কি বলেন, “রাশিয়ার এই লাগাতার হামলার জবাব দিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত দরকার। এই সহিংসতা থামানো সম্ভব যদি এখনই কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “এই যুদ্ধকে কেবল শক্তির মাধ্যমেই থামানো সম্ভব। আমরা কেবল সঙ্কেত নয়, কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করি—যা মানুষের জীবন বাঁচাবে।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ মিশন জানিয়েছে, গত জুন মাসে ইউক্রেনে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা ছিল গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ—২৩২ জন নিহত এবং এক হাজার ৩৪৩ জন আহত।

সাম্প্রতিক এই হামলায় ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলের লভিভ, লুতস্ক ও চেরনিভৎসি শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চেরনিভৎসকি অঞ্চলের গভর্নর রুসলান জাপারানিউক জানান, রোমানিয়ার সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চেরনিভৎসি শহরে একটি ড্রোন ও একটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। এতে ২৬ বছর বয়সী এক নারী ও ৪৩ বছর বয়সী এক পুরুষ নিহত হন এবং অন্তত ১৪ জন আহত হন।
এছাড়া শহরজুড়ে একাধিক স্থানে আগুন লেগে যায় এবং বহু আবাসিক ভবন ও প্রশাসনিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী লভিভ শহরে হামলায় ৪৬টি আবাসিক ভবন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভবন, আদালত ভবন এবং প্রায় ২০টি ছোট ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দপ্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান শহরের মেয়র।

লভিভের ৬৪ বছর বয়সী বাসিন্দা ওলেহ সিদোরভ রয়টার্সকে বলেন, “জানালা ও দরজা উড়ে গেছে। পর্দা ছিঁড়ে পড়েছে, টিভি ছিটকে গেছে। পুরো ঘর কাঁচের টুকরোয় ভরে গেছে। এটা ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা।”
তিনি বলেন, “আমি ঘর পরিষ্কার করতে চাই, কিন্তু জানালা ছাড়া কীভাবে রাতে ঘুমাব—সেটা ভাবতেই পারছি না।”