যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি ব্রাজিলের

ব্রাজিলের পণ্য রপ্তানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জবাবে মার্কিন পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ব্রাজিল। দেশটির প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন পণ্যের ওপরও একই পরিমাণ (অর্থাৎ ৫০ শতাংশ) শুল্ক আরোপ করা হবে। দুই দেশের এই পাল্টা-পাল্টি হুঁশিয়ারি একটি বড় ধরনের বাণিজ্য যুদ্ধের অশনিসংকেত দিচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ট্রাম্পের হুমকির একদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম রেকর্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লুলা দা সিলভা এই মন্তব্য করেন। এর আগে ট্রাম্প ব্রাজিলের পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন।
লুলা দা সিলভা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে ব্রাজিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লিউটিও) আবেদন করতে পারে, আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাব করতে পারে এবং ‘ব্যাখ্যা দাবি’ করতে পারে। তবে তিনি রেকর্ডকে বলেন, মূল বিষয় হলো কংগ্রেস কর্তৃক পাস করা আইন, যা লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতিকে শুল্ক আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রণীত হয়েছে।
এর আগে বুধবার এক বিবৃতিতে লুলা দা সিলভা আরও বলেছিলেন, ট্রাম্পের এই দাবি ভুল যে, ব্রাজিলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ক একেবারে পারস্পরিক নয়। তিনি বলেন, মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধি ব্রাজিল মোকাবিলা করবে।
আজ (শুক্রবার) সকালে প্রেসিডেন্ট লুলা ব্রাজিলের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার সরকার কীভাবে ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি মোকাবিলা করবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। লুলার চিফ অব স্টাফের কার্যালয় জানিয়েছে, কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে তা সিদ্ধান্ত নিতে একটি পর্যালচানা কমিতি গঠন করা হবে।
এদিকে ট্রাম্প ইতোমধ্যেই হুমকি দিয়েছেন, ব্রাজিল যদি পাল্টা জবাব দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। মার্কিন শুল্ক আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত বুধবারের এক চিঠিতে ট্রাম্প লুলাকে লিখেছেন, যদি কোনো কারণে আপনারা আপনাদের শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আপনারা যে সংখ্যা বেছে নেবেন, তা আমাদের ৫০ শতাংশের সঙ্গে যুক্ত হবে।

ব্রাজিলের ওপর এই শুল্কের হুমকি প্রস্তাবিত মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির একটি অংশ। গত বুধবার হোয়াইট হাউসে কয়েক ডজন দেশের ওপর শুল্ক বাড়ানোর কথা ছিল। তবে ট্রাম্প ১ আগস্ট পর্যন্ত তিন সপ্তাহের জন্য এটি স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি ট্রাম্প বাংলাদেশ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, যদি তারা তার প্রশাসনের সঙ্গে কোনো চুক্তি না করে, তাহলে তাদের নতুন মার্কিন শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। ট্রাম্পের এই আগ্রাসী বাণিজ্য নীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করছে।