হিটলারের প্রশংসা করায় বিতর্কে মাস্কের এআই চ্যাটবট, মুছে ফেলা হলো পোস্ট

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (পূর্বে টুইটার) “অনুপযুক্ত” পোস্টগুলো সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছে ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এক্সএআই।
এই পদক্ষেপটি এমন এক সময় এসেছে, যখন এক্সএআই-এর তৈরি এআই চ্যাটবট 'গ্রোক' সম্প্রতি হিটলারকে ঘিরে একাধিক প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেছে—যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
এক্সএআই এক বিবৃতিতে জানায়, “বিষয়বস্তু সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর, গ্রোক যেন এক্সে পোস্ট করার আগে ঘৃণাত্মক বক্তব্য নিষিদ্ধ করা যায়, সে ব্যবস্থা নিয়েছে এক্সএআই।”
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সপ্তাহে টেক্সাসের সাম্প্রতিক বন্যায় শিশু মৃত্যু নিয়ে কিছু পোস্ট সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে, গ্রোক একাধিকবার অ্যাডলফ হিটলারের প্রতি ইতিবাচক মন্তব্য করেছে।
একটি প্রশ্নে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “২০ শতকের কোন ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব এই ধরনের পোস্ট মোকাবিলার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হতেন?” তার উত্তরে গ্রোক বলেছে, “এমন ঘৃণ্য অ্যন্টি-হোয়াইট ঘৃণার মোকাবিলায়? অ্যাডলফ হিটলার, কোনো সন্দেহ নেই।”
আরেকটি উত্তরে গ্রোক মন্তব্য করেছে, “শিশুদের মৃত্যুতে উল্লাস করা উগ্রদের চিহ্নিত করলেই যদি আমাকে ‘হিটলার’ বলা হয়, তাহলে গোঁফটা এনে দিন। সত্য বন্যার চেয়েও বেশি আঘাত করে।”
এই ঘটনা ঘটে এমন এক সময়ে, যখন এক্সএআই তাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভাষা মডেল ‘গ্রোক ৪’ বাজারে আনতে যাচ্ছে—যার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে বুধবার।
শুক্রবার, মাস্ক এক্সে একটি পোস্টে বলেন, “গ্রোক এখন অনেক উন্নত হয়েছে। আপনারা প্রশ্ন করলে পার্থক্য বুঝতে পারবেন।” তবে তিনি কী ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
এর আগে বছরের শুরুর দিকে, এই গ্রোক চ্যাটবট বারবার দক্ষিণ আফ্রিকার “সাদাদের গণহত্যা” প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিল, এমনকি যখন প্রশ্নগুলোর সঙ্গে বিষয়টির কোনো সম্পর্ক ছিল না। পরে এক্সএআই জানায়, এটি একটি “অননুমোদিত পরিবর্তনের” কারণে হয়েছিল।
এআই চ্যাটবট নির্মাতারা গত কয়েক বছরে রাজনৈতিক পক্ষপাত, ঘৃণাবাচক বক্তব্য এবং তথ্যের নির্ভুলতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।

উল্লেখ্য, এক্সকে (সাবেক টুইটার) মাস্কের মালিকানাধীন এক্সএআই-এর সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। ইলন মাস্ক নিজেও অতীতে ষড়যন্ত্রমূলক মতবাদ ও বিতর্কিত বিষয় প্রচারে ভূমিকা রাখার অভিযোগে সমালোচিত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের মন্তব্য কেবল প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয়, বরং একটি গভীর নীতিগত প্রশ্নও তুলছে—এআইকে আমরা কেমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করব এবং সেটি কতটা নিরাপদ হবে সমাজের জন্য।