কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ট্রাম্পের অবস্থান পরিবর্তন

ইরানের ওপর ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্য তার অবস্থানে এক নাটকীয় পরিবর্তন এনেছে, যা রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরের ভিন্ন ভিন্ন মতের প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। এই হামলা নিয়ে তিনি যেভাবে কথা বলেছেন, তা তার বারবার অবস্থান বদলানোর ইঙ্গিত দেয়। খবর আল-জাজিরার।
হামলা চালানোর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি চাননি ইসরায়েল এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ুক। তার যুক্তি ছিল, এতে ইরানের সঙ্গে আমেরিকার পারমাণবিক আলোচনা ‘উড়িয়ে যাবে’ ও কূটনৈতিক সমাধান ব্যাহত হবে।
তবে, হামলার প্রায় পরপরই ট্রাম্প তার পূর্বের অবস্থান থেকে সরে এসে মন্তব্য করেন। তিনি এই হামলাগুলোকে তার ভাষায় ‘চমৎকার’ বলে অভিহিত করেন। এরপর তিনি এই হামলার জন্য ইরানকেই দোষারোপ করেন।
ট্রাম্পের দাবি, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত চুক্তিটি গ্রহণ করেনি বলে এই হামলা ঘটেছে।
ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে সতর্ক করে বলেছেন, আরও হামলা হবে ও সেগুলো ‘আরও নৃশংস’ হবে। তিনি বলছেন, ইরানের চুক্তিতে ফিরে আসার সময় এসেছে।
ট্রাম্পের দ্বৈত অবস্থান ও রিপাবলিকান পার্টির বিভাজন
এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প দুটি বিরোধপূর্ণ আবেগের মধ্যে আটকা পড়েছেন, যা রিপাবলিকান পার্টির বিভিন্ন পক্ষের দ্বারা বাস্তবায়িত। একদিকে, ট্রাম্পের কিছু সমর্থক তাকে একজন শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী কূটনৈতিক রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেখতে চান, যা তিনি তার উদ্বোধনী ভাষণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান পার্টির যুদ্ধের পক্ষ থেকেও আমেরিকাকে ইরানে সরাসরি বোমা হামলায় আরও বেশি জড়িত হতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আশ্চর্যজনকভাবে, ট্রাম্প নিজেও এই ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।

এতে প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্প আসলে কোন দিকে আছেন। মনে হচ্ছে, এই মুহূর্তে তার কাছে যা বেশি চিত্তাকর্ষক মনে হচ্ছে, সেটাই তিনি প্রকাশ্যে বলছেন। তার এই বারবার অবস্থান পরিবর্তন মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকটকে ঘিরে মার্কিন নীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে তুলছে।