৪৮ কলায় পেট থেকে বের হলো চুরির হার!

কলার যে অনেক রকমের ঔষধি গুণ আছে, সে কথা প্রায় সবারই জানা। কিন্তু সেই কলা যে পুলিশের জন্য মোক্ষম অস্ত্র হতে পারে, এ কথা হয়তো অনেকেরই জানা নেই। কারণ, কলা দিয়েই চুরি যাওয়া সোনার হার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার রাতে। মুম্বাইয়ের ঘাটকোপার ইস্ট ফিশ মার্কেট এলাকায় এক নারীর গলার সোনার হার ছিনতাই করে এক যুবক। হার ছিনতাই করে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও ওই নারীর চিৎকারে মুহূর্তের মধ্যে চারপাশ থেকে ছুটে আসে লোকজন। ছিনতাইকারীকে দৌড়ে পালাতে দেখে ধাওয়া করে তারা। একসময় ধরে ফেলে ছিনতাইকারীকে।
প্রথমে শুরু হয় গণধোলাই। তার পর ছিনতাইকারীকে তুলে দেওয়া হয় স্থানীয় পন্তনগর থানা পুলিশের হাতে। পুলিশ ছিনতাইকারীকে হেফাজতে নিয়ে জানতে পারে, তার নাম গোপী ঘাওয়ারে। বয়স ২৫ বছর।
গণধোলাই খেয়ে বিধ্বস্ত গোপীকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজাওয়াড়ি হাসপাতালে। কিন্তু সমস্যা বাধে অন্য জায়গায়। গোপীকে হাজার তল্লাশি করে কোথাও সোনার অলংকারের হদিস মেলে না। এমনকি পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদেও গোপী হার ছিনতাইয়ের কথা অস্বীকার করে। কিন্তু হার ছিনতাই হওয়া নারীর দাবি, ওই ব্যক্তিই তার গলার হার টেনে নিয়ে পালিয়েছে।
অগত্যা গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ সোনার হারের সন্ধান পেতে গোপীর পেট এক্স-রে করার সিদ্ধান্ত নেয়। এক্স-রে করতেই পুলিশের সন্দেহ যে অমূলক নয়, তা প্রমাণ হয়ে যায়। এক্স-রে প্লেটে ধরা পড়ে, গোপীর পেটের মধ্যেই রয়েছে সোনার হার। ফেঁসে গেছে বুঝে গোপী স্বীকার করে, ছিনতাইয়ের পর সে সোনার হারটি লুকাতে সেটি গিলে খেয়ে ফেলেছে।
এদিকে, সোনার হারের হদিস মিললেও সেই হার কীভাবে বের করা হবে, তা নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় পড়ে যান পুলিশ সদস্যরা। পরে অনেক ভেবে বুদ্ধি বের করা হয়। ছিনতাইকারীর পেট থেকে সোনার হার বের করতে শেষমেশ কলার ওপরেই ভরসা রাখেন তাঁরা।
আস্ত এক কাঁদি কলা নিয়ে আসা হয়। চার পুলিশকর্মী মিলে ছিনতাইকারী গোপীর সামনে বসে জোর করে তাকে কলা খাওয়ানো শুরু করেন।
একনাগাড়ে চার ডজন বা ৪৮টি কলা খাওয়ানোর পর প্রাকৃতিক কর্মের বেগ পায় গোপীর। কিন্তু সমস্যা এখানেও। কারণ, শৌচালয়ে যাওয়া চলবে না। অগত্যা চার পুলিশ কনস্টেবলের সামনেই প্রাকৃতিক কর্ম সারতে বসে পড়ে গোপী। শুরু হয় টানটান উত্তেজনা।
অবশেষে কলার গুণে গোপীর পেট থেকে বের হয়ে আসে ছিনতাই হয়ে যাওয়া আস্ত সোনার হার। এর পরেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচে মুম্বাইয়ের পন্তনগর থানার পুলিশ।