মোদি-মমতাকে উৎখাতের ডাক বাম নেতাদের

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে দাঁড়িয়ে বামফ্রন্ট নেতারা একের পর এক ভারতের কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। রোববার দুপুরে ব্রিগেডের ওই সভায় মোদি-মমতাকে উৎখাতের ডাক দিলেন বাম নেতারা। এ সময় পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে গণতন্ত্রের নাম করে তৃণমূল সরকার মূলত বিজ্ঞাপনের সরকার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বাম নেতারা।
রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাসের রাজত্ব ধ্বংস করার জন্য এদিন ব্রিগেডের সভা থেকে ডাক দেন পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। বিমান বসু বলেন, ‘আজ পশ্চিমবঙ্গে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের দিকে দিকে নির্যাতিতরা বিচার পাচ্ছে না। প্রশাসনকে করায়ত্ত করা হয়েছে। মুখ খুললেই মামলা ঠুকে দেওয়া হচ্ছে। খুনি আর ধর্ষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার জন্য সবাইকে যৌথভাবে সংগ্রামের পথে নামতে হবে।’ গণতন্ত্রের প্রয়োজনে অবিলম্বে এই সরকারকে উৎখাত করা প্রয়োজন বলেও দাবি করেন তিনি।
বিমান বসুর সুরে সুর মিলিয়ে সিপিএমের সদস্য বৃন্দা কারাত বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নিজে একজন মহিলা হয়েও রাজ্যের মহিলাদের প্রতি নজর দিচ্ছেন না।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোপন আঁতাত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বৃন্দা বলেন, ‘মোদি ও মমতা বাইরে কুস্তি দেখালেও আসলে ভিতরে ভিতরে দোস্তি।’
সভায় উপস্থিত থেকে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, ‘দেশে আজ জিনিসের দাম বাড়ছে। টাকার দাম কমছে। কৃষকরা আত্মহত্যা করছে। সেদিকে নজর নেই কারো। আমাদের মনে রাখা দরকার, স্বাধীনতা আন্দোলনে পথ দেখিয়েছিল এই বাংলা। তাই এখান থেকেই আবার আন্দোলন সংগঠিত হবে।’
সিপিএম সাংসদ মুহম্মদ সেলিম তৃণমূলকে জল্লাদবাহিনী বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘মাথায় কাপড় জড়িয়ে আজ মুসলমান সাজার চেষ্টা করছেন মমতা, ওতে মুসলমানদের কোনো লাভ হবে না। সারদাকাণ্ডে মদন জেলে গেছে, এবার মুকুল যাবে, তারপর পিসি-ভাইপোকে (মমতা এবং অভিষেক) নিয়ে টানাটানি হবে।’
কলকাতা ব্রিগেডের এই সভায় দাঁড়িয়ে সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘মমতা কথায় কথায় বলেন, একই বৃন্তে দুটি ফুল। আসলে সেই দুটি ফুল হলো বিজেপির পদ্মফুল এবং তৃণমূলের ঘাসফুল।’
সিপিএমের আরেক নেতা সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘মোদিকে সরিয়ে যেমন ভারত বাঁচাতে হবে, তেমনি তৃণমূলকে সরিয়ে বাংলা বাঁচাতে হবে।’
সবশেষে পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তাঁর বক্তৃতায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে অপসারণের ডাক দেন।