ভারতের উত্তরাখণ্ডে আকস্মিক বন্যা, বহু নিখোঁজের শঙ্কা

ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের চামোলি জেলায় ক্লাউডবার্স্টের ফলে আকস্মিক বন্যার ঘটনা ঘটেছে। এতে বহু মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে এ ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।
ক্লাউডবার্স্টের ফলে প্রবল বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক স্রোতে বিপুল পরিমাণ মাটি ও পাথর নেমে এসে ঘরবাড়ি, সরকারি ভবন ও বাজার এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
চামোলি জেলার থারালি বাজার এলাকা ও থারালি তহসিল কমপ্লেক্স পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে। তহসিলের এসডিএম-এর সরকারি বাসভবন, বহু দোকানপাট, আবাসিক ভবন ও গাড়ি মাটিচাপা পড়েছে।
নিকটবর্তী সাগওয়ারা গ্রামে এক কিশোরী ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
থারালি-গোয়ালদাম এবং থারালি-সাগওয়ারা সড়ক দুটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। চেপডন বাজার এলাকার বেশ কিছু দোকানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চামোলি জেলা প্রশাসক সন্দীপ তিওয়ারি বলেন, “ক্লাউডবার্স্টে থারালি তহসিল এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু বাড়িঘর, দোকানপাট ও সরকারি বাসভবন সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত।”
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ও অঙ্গরাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এসডিআরএফ) দল রাত থেকেই উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার ও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ত্রাণ শিবিরও খোলা হয়েছে।
চামোলি পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “গতরাতে প্রবল বর্ষণে জনজীবন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে থারালি থানার পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেয়, স্থানীয়দের সতর্ক করে রাতেই তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।”
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, তিনি পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছেন। এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, “চামোলি জেলার থারালি এলাকায় ক্লাউডবার্স্টের দুঃখজনক খবর পেয়েছি। জেলা প্রশাসন, এসডিআরএফ ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চালাচ্ছে। আমি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সবার নিরাপত্তার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি।”

এ মৌসুমে উত্তরাখণ্ডে টানা ভারী বৃষ্টিপাত, ক্লাউডবার্স্ট, আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধস দেখা দিচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে হরসিল ও ধরালিতে ক্লাউডবার্স্টে বহু মানুষ নিখোঁজ হন এবং অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (আইএমডি) রাজ্যে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে। বিশেষ করে বাগেশ্বর, পিথোরাগড়, নৈনিতাল, দেরাদুন, টেহরি, উত্তরকাশী ও গড়ওয়াল পাহাড়ি এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আইএমডি।