কলকাতায় পাঁচ দিনব্যাপী বাংলাদেশ বিজয় উৎসব শুরু

কলকাতায় শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ বিজয় উৎসব’। আজ মঙ্গলবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ উপদূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত এ উৎসব শুরু হয়েছে।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন। এ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য তিনি আজ সকালেই কলকাতায় পৌঁছান।
এ সময় অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপদূতাবাসের উপরাষ্ট্রদূত জকি আহাদসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনের পর আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। এটা আল্লাহর রহমত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত ১৯৭১ সালে যেভাবে পাশে ছিল, আমি মনে করি আজও সেভাবেই বাংলাদেশের পাশে রয়েছে।’
এ সময় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকার কথা স্মরণ করে শিল্পমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, ছয় দফা দাবিসহ নানা স্মৃতিচারণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরেন। দুই বাংলার মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর আন্তরিক চেষ্টায় আজ দুই বাংলার মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় হচ্ছে। আশা রাখি, এই বন্ধন আগামীতে আরো মজবুত হবে।’
ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘পাঁচ বছর বয়সে বাবার হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনার সৌভাগ্য হয়েছিল। সেই সময় বঙ্গবন্ধুকে দেখে আমার সালাম জানাতে ইচ্ছা করেছিল। আজ তিনি নেই। কিন্তু আমি আজও তাঁকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই বাঙালিদের জন্য একটি দেশ করে দিয়ে গিয়েছিলেন।’ দুই বাংলার বন্ধুত্ব এবং সম্পর্কের উন্নয়ন নিয়ে বলতে গিয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি হৃদয়, একটি বাংলাদেশ আর অপরটি পশ্চিম বাংলা।’
জকি আহাদ বলেন, ‘আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকলে সোনার বাংলা দেখতে পেতেন।’ এ সময় তিনি একাত্তরে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় শরণার্থীদের ভারতে আশ্রয় দেওয়া এবং বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামে ভারতের সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন।
উৎসবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে থাকছে নজরুলসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত, লোকগীতি, বাউলগান, লালনগীতি, আধুনিক গান, ব্যান্ডসংগীত, সুফিসংগীত, নৃত্য ও মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। সংগীগতানুষ্ঠানে অংশ নেবেন বাংলাদেশের রেনেসাঁ, রুনা লায়লা, কোনাল, অরিন, কুষ্টিয়ার লালন শিল্পীগোষ্ঠী, কৃষ্ণকলিসহ পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট শিল্পীরা। এই বিজয় উৎসবে কলকাতার মাটিতে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পণ্যসম্ভারও স্থান পাবে। যার মধ্যে রয়েছে জামদানি, টাঙ্গাইল তাঁত, রাজশাহী সিল্কসহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য এবং কারু ও হস্তশিল্পসহ অন্যান্য পণ্য। এ ছাড়া ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার যেমন খিচুড়ি, বিরিয়ানি, গ্রাম-বাংলার পিঠা-পুলি, সন্দেশ ইত্যাদি হবে উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ।
১৫ থেকে ১৮ ডিসেম্বর ভারতীয় সময় দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে এই মেলা। তবে ১৯ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আগ্রহীরা এই বাংলাদেশ বিজয় উৎসবে অংশ নিতে পারবেন।