যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি অনিশ্চিত, শুল্কারোপের শঙ্কায় ভারত

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের একটি অন্তর্বর্তী বাণিজ্যচুক্তি আগামী ১ আগস্টের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে। ভারতীয় সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, কৃষিপণ্য ও দুগ্ধজাত পণ্যের শুল্ক কমানো নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা এখনও অচল অবস্থায় রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে আলোচনার সুযোগ দিতে সেটি তিনি স্থগিত রাখেন। যার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১ আগস্ট। কিন্তু এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক শুল্ক-বিজ্ঞপ্তি পায়নি ভারত, যা এরই মধ্যে ২০টির বেশি দেশ পেয়েছে।
ভারতের প্রধান আলোচক রাজেশ আগরওয়ালের নেতৃত্বে বাণিজ্য প্রতিনিধিদল সম্প্রতি পঞ্চম দফার বৈঠক শেষে ওয়াশিংটন থেকে দেশে ফিরেছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
ভারত সরকারের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগস্টের আগেই অন্তর্বর্তী চুক্তি হওয়া কঠিন মনে হচ্ছে। তবে ভার্চুয়াল আলোচনা চলছে। শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধিদল দিল্লি সফরে আসবেন।
আলোচনা স্থবির হয়ে আছে মূলত দুই দেশের ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানের কারণে। নয়াদিল্লি রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর কৃষি ও দুগ্ধখাতকে উন্মুক্ত করতে রাজি নয়। অন্যদিকে ওয়াশিংটন ভারতের স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও গাড়ির ওপর আরোপিত উচ্চ শুল্ক থেকে ছাড় দেওয়ার দাবিতে অনমনীয় অবস্থানে রয়েছে।
আরেক কর্মকর্তা জানান, এই বিতর্কিত বিষয়গুলো ভবিষ্যতের জন্য স্থগিত রেখে একটি অন্তর্বর্তী চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালক অজয় সাহাই সতর্ক করে বলেন, ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলে রত্ন ও গহনা খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে তিনি মনে করেন, এই পরিস্থিতি সাময়িক, কারণ দুই দেশই দীর্ঘমেয়াদে চুক্তি করতে আগ্রহী।

সোমবার (২১ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট সিএনবিসিকে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তির সময়ের চেয়ে গুণগত মানকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, সেটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওপর নির্ভর করছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফেব্রুয়ারির বৈঠকে আলোচিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যচুক্তি সম্ভব হতে পারে।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিস এ বিষয়ে রয়টার্সের পাঠানো ই-মেইলের জবাবে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।