ভারতে অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে এবার ৫০ ইতিহাসবিদ

ভারতে এবার ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে নামলেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় ইতিহাসবিদরাও। দেশের বর্তমান পরিবেশ ‘চরম দূষিত’ উল্লেখ করে তাঁরা সর্বস্তরের মানুষের জন্য নিরাপত্তা দাবি করেছেন।
সারা ভারতের ৫০ জনের বেশি ইতিহাসবিদ সরকারের উদ্দেশে একটি বিবৃতিতে দিয়েছেন। এর মধ্যে রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিব, বি ডি চট্টোপাধ্যায়, উপিন্দর সিং, এমজিএস নারায়ণন, ডি এন ঝার মতো খ্যাতনামা ইতিহাসবিদও রয়েছেন।
বিবৃতিতে ইতিহাসবিদরা বলেন, ‘বিভিন্ন অসহিষ্ণু কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের পরিবেশ এখন চরম দূষিত করা হয়েছে।’ তাঁরা সরকারের প্রতি এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান, যা মুক্ত ও নির্ভীক মতামত প্রকাশ, সমাজের সর্বস্তরের মানুষের এবং মূল্যবোধ ও বহুত্ববাদের নিরাপত্তায় সহায়ক হবে।
ইতিহাসবিদরা বলেন, ‘এখন মতের ভিন্নতা মেটানো হচ্ছে শারীরিক সহিংসতার মাধ্যমে। যুক্তির বিপরীতে পাল্টা যুক্তি নয়, ব্যবহার করা হচ্ছে বুলেট। একজন দরিদ্র ব্যক্তি যখন একটি খাবার রাখার জন্য সন্দেহভাজন হন, যে খাবার অন্য সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, তখন পিটিয়ে হত্যাই হয় তাঁর নিয়তি।’
ইতিহাসবিদরা বিবৃতিতে অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রধান সুধেন্দ্র কুলকার্নির ওপর হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার কালি ছুড়ে মারারও সমালোচনা করেন।
বিবৃতিতে ইতিহাসবিদরা বিভিন্ন লেখকের পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়া এবং এ ব্যাপারে সরকারের নীরবতার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। তাঁরা বলেন, দেশের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সরকার কোনো মন্তব্য করেনি; বরং মন্ত্রীরা এ পরিস্থিতিকে গণমাধ্যমের সৃষ্টি বলে অভিহিত করেছেন এবং সাংবাদিকদের লিখতে নিষেধ করেছেন।
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদে ভারতে সম্প্রতি অর্ধশত লেখক ও সাংবাদিক তাঁদের সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার ফেরত দেন। পরে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বরাও তাঁদের জাতীয় পুরস্কার ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দেন।