হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায় ভোট বাড়ে বিজেপির!

ভারতের উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে গরুর মাংস রাখার অভিযোগে মো. আখলাক নামের একজনকে সম্প্রতি হত্যা করা হয়। এ নিয়ে এক টেলিভিশন বিতর্কে বিজেপির একজন নেতা কৌতূহলোদ্দীপক বক্তব্য দেন।
ওই নেতা বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি করে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) কোনো সুবিধা নেয়নি। ইতিহাস বলে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর আমরা সব রাজ্য নির্বাচনে হেরেছি। গুজরাটে দাঙ্গার পর আমরা ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে হেরেছি।’
সাম্প্রদায়িক রাজনীতি থেকে বিজেপি সুবিধা নেয়নি বলে ওই নেতা যে দাবি করুন না কেন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে-পরে এ নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা পায়। বিশেষত ২০০২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ বারবারই করেছেন বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিপক্ষগুলো। এ ধরনের রাজনীতি করে বিজেপি ভোট আদায় করতে চায় বলেও বিরোধীদের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন দাবি করেছেন রোহিত টিকু নামের একজন গবেষক। তিনি জেনেভার দ্য গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউটের পিএইচডি গবেষক।
‘রায়ট রিওয়ার্ডস? স্টাডি অব বিজেপিস ইলেকটোরাল পারফরম্যান্স অ্যান্ড হিন্দু মুসলিম রায়টস’ শিরোনামে এক গবেষণায় তিনি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সঙ্গে ভোট বাড়াকে সম্পর্কিত করেছেন।
ওই গবেষক দেখিয়েছেন, রাজ্য নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল এবং দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বিজেপির ভোট বাড়িয়েছে। এ গবেষণায় কেবল দাঙ্গার পর নির্বাচনের ফলের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কী কারণে ভোট বেড়েছে বা কোন প্রক্রিয়ায় ভোট বাড়ানো হয়েছে, তা আলোচনা করা হয়নি।
ওই গবেষণায় ১৯৮০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ১৫১টি জেলার দাঙ্গা পরিস্থিতি বিবেচনা করা হয়। এতে বলা হয়, ওই সময়ে বিভিন্ন নির্বাচনে দাঙ্গার কারণে বিজেপির ভোট ২.৯ থেকে ৪.৪ শতাংশ বাড়ে।
গবেষণায় বলা হয়, বিজেপির ভোট দুটি কারণে বাড়তে পারে। প্রথমত, অলক্ষণীয় কিছু কারণে দাঙ্গা হতে পারে এবং এ থেকে বিজেপির ভোট বাড়তে পারে। দ্বিতীয়ত, ভোট পাওয়ার জন্য বিজেপি দাঙ্গা বাধাতে পারে।