মন্দিরে ঢোকায় বৃদ্ধকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা

ভারতের মন্দিরে ঢোকার অপরাধে ৯০ বছর বয়সী এক দলিত বৃদ্ধকে হত্যা করা হয়েছে। দেশটির উত্তর প্রদেশ রাজ্যের হামিরপুরা জেলায় গত বুধবার এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার দুইদিন পর আজ শুক্রবার নির্মম এ ঘটনার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে পুলিশ।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশের কানপুর থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরের ওই গ্রামে গত বুধবার সন্ধ্যায় চিম্মা নামের দলিত বৃদ্ধ স্থানীয় ময়দান বাবার মন্দিরে পুজা করতে যান। কিন্তু মন্দিরে ঢুকতে গেলে সঞ্জয় তিওয়ারি নামের উচ্চবর্ণের এক ব্যক্তি তাঁকে বাধা দেন। এরপর বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে বৃদ্ধ তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে ওই মন্দিরে ঢুকলে সঞ্জয় ও তাঁর সঙ্গীরা চিম্মাকে প্রথমে কুঠার দিয়ে কোপান। এরপর তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করতে মন্দির চত্বরে রাখা আগুনে তাঁকে জীবন্ত ফেলে দেন। এ সময় দলিত বৃদ্ধের স্ত্রী শান্তি ও ছেলে দুর্জনকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার লোকজন অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। জালালপুর থানার পুলিশ কর্মকর্তা রামাশ্রয় যাদব জানান, ঘটনার মূল অভিযুক্ত সঞ্জয়সহ আরো তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তাকৃতদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
নিহত বৃদ্ধ চিম্মার ছেলে দুর্জন জানান, ঘটনার দিন তাঁর বাবা ও মা উপাস ও ব্রত পালন করছিলেন। কিন্তু মন্দিরে ঢুকতে গেলে সঞ্জয় বাধা দেওয়ার পর তাঁরা দীর্ঘক্ষণ মন্দিরের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। সন্ধ্যায় সঞ্জয়সহ সবাই মন্দিরের বাইরে চলে গেলে তাঁরা তিনজন পূজা করার জন্য ওই মন্দিরে যান। কিন্তু সঞ্জয় ততক্ষণে আরো তিনজনকে নিয়ে ফিরে আসেন এবং ওই মন্দির চত্বরেই তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেন।
ঘটনার একপর্যায়ে দুর্জন দৌড়ে পালিয়ে গ্রামবাসীকে বিষয়টি জানান। কিন্তু অভিযুক্ত সঞ্জয়ের উন্মত্ততা দেখে অবশ্য কেউই ওই বৃদ্ধকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসতে পারেনি। সবার চোখের সামনেই বৃদ্ধ চিম্মাকে আগুনে ঠেলে দেন সঞ্জয়। চিম্মা যখন পুড়ছিলেন সঞ্জয় তখন তাঁর পোড়া শরীরের ওপর কেরোসিন ঢেলে দেন বলেও জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। অবশ্য এর কিছুক্ষণ পর গ্রামের কয়েকজন যুবক এগিয়ে এসে সঞ্জয়কে ধরে ফেলে।
পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেছেন, সঞ্জয় নেশাগ্রস্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। অবশ্য ভারতে উচ্চবর্ণের ব্যক্তিদের বাঁচাতে পুলিশের এই ধরনের বক্তব্য নতুন কিছু নয়।